ফালাকাটায় পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে মহিলাদের মারধরের অভিযোগ, অস্বস্তিতে তৃণমূল

কসবা কাণ্ডে এমনিতেই শাসক দল। সেই আবহে গুরুতর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। ফালাকাটা ব্লকের কুঞ্জনগরে ওই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মহিলাদের মারধরের গুরুতর অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তীরে রয়েছেন কুঞ্জনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অসিত কর। শুক্রবার বিকেলে গ্রামে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্প ঘিরে উত্তেজনার জেরে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, এটা চক্রান্ত। (

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে রাস্তার মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন অসিত। এরপর হঠাৎই রেগে গিয়ে মহিলাদের লক্ষ্য করে কিল ঘুষি মারেন। কাউকে গলায় ধাক্কা মারেন, আবার কাউকে লাথি মারেন বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা) সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে। (

অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন গৃহবধূ জানান, পঞ্চায়েত সদস্য তাঁকেও মারেন, তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়িকেও ধাক্কা দেন। আরও অনেক মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন। থানায় অভিযোগ জানিয়েছন তাঁরা। এদিকে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত অসিত করের ফোন বন্ধ। তাঁকে আর পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। (

পুরো ঘটনা ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘তৃণমূলের রাজত্বে পশ্চিমবঙ্গে মা বোনেরা একদমই সুরক্ষিত নয়। প্রতিনিয়ত রাজ্যের প্রায় সর্বত্র মহিলারা তৃণমূল নেতা কর্মীদের হাতে অত্যাচারিত, লাঞ্ছিত হচ্ছেন। আসলে তৃণমূলের পরিচয় এটাই। মহিলাদের প্রতি এদের সামান্য সম্মান টুকুও নেই। রাজ্যের মহিলারা তৃণমূল দলের ছোটো বড় নেতাদের হাতে নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছেন, ধর্ষিত হচ্ছেন, লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন। আলিপুরদুয়ারের এই ঘটনার আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং প্রশাসনের কাছে ঐ দুই পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মন বলেন, একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি যদি প্রকাশ্যে মহিলাদের মারেন, তাহলে এটা দুর্ভাগ্যজনক। দোষীকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। অন্যদিকে তৃণমূলের পালটা দাবি, ঘটনাটি আসলে বিজেপির সাজানো। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি প্রকল্প দেখতে গিয়ে গ্রামে গেলে পঞ্চায়েত সদস্যদের ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। সেখান থেকেই গোলমাল বাঁধে। তৃণমূলের ফালাকাটা গ্রামীণ ব্লক সভাপতি সঞ্জয় দাস বলেন, বিজেপি-সমর্থিত কিছু লোক পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে। পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রাণে বাঁচতে সেখান থেকে কোনওরকমে পালিয়ে যান। যদিও প্রকৃত ঘটনা কী, তা নিয়ে এখনও তদন্ত শুরু করেনি প্রশাসন। তবে আক্রান্ত মহিলারা অভিযোগ দায়ের করেছেন ফালাকাটা থানায়।