মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে যাওয়ার আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম। রবিবার গভীর রাতে এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে নন্দীগ্রামের কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। আগামীকাল মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে আসার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তার আগে এমন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির বিরুদ্ধে হামলার তুলেছে তৃণমূল। এই ঘটনার প্রতিবাদে নন্দীগ্রামে অনির্দিষ্টকালের জন্য বনধ ডেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: কাউন্সিলর পদ খুইয়ে সংসারে অনটন, দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতে 'খুন' তৃণমূল নেতা!
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাতে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর জালপাই এলাকায় আচমকা একদল দুষ্কৃতী তৃণমূলের বুথ সভাপতি গুরুপদ মণ্ডল এবং তৃণমূল কর্মী বিষ্ণুপদ মণ্ডলের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। দুষ্কৃতীরা তাদের একের পর এক কোপ বসাতে থাকে। তখন তাঁদের চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা ছুটে চলে আসেন। তাদের দেখে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রাই দুজনকে উদ্ধার করে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে রাত্রি দেড়টা নাগাদ মৃত্যু হয় বিষ্ণুপদর। অন্যদিকে, ধারালো অস্ত্রের কোপে শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর চোট পেয়েছেন গুরুপদ মণ্ডল। তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিকভাবে নন্দীগ্রামের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকেই লড়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে তাঁর জেলা সফরে যাওয়ার আগে এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এর প্রতিবাদে বনধের ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য , দোষীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বিজেপির ওপরেই হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
এদিকে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য এরসঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাদ পালের দাবি, এটা কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয়। এই ঘটনা হল পারিবারিক বিবাদ। আসলে তৃণমূল কর্মী আর নেতার মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। তারা দুজনে মদ্যপ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করে। তারপরেই এমন কাণ্ড। ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করলেই জানা যাবে আসল দোষী কে?