তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে বহিরাগতদের নিয়ে এসে হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষ এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ইট, পাথর দিয়ে হস্টেলের দরজা, জানলা ভাঙার পাশাপাশি ছিনতাই এবং মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় দু’পক্ষই বর্ধমান থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে। বিবেকানন্দ হস্টেলের মেস কমিটিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৃথক একটি অভিযোগ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্র পরিষদের ২ গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, বন্ধ হল ফেস্ট
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্তরঞ্জন হস্টেলের আবাসিক রজনীকান্ত দাস বৈরাগ্য। তাঁর অভিযোগ, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে স্বরাজের নেতৃত্বে তাঁর দলবলল হস্টেলে ঢুকে ইট, পাথর ছুঁড়তে থাকে। তাতে হস্টেলের দরজা, জানালার কিছু অংশ ভেঙে যায়। ঘটনায় আবাসিকরা বেরিয়ে এলে তাদের উপর রড, বাঁশ, লাঠি দিয়ে হামলা চালানো হয়। শুধু তাই নয়, রজনীকান্তের দাবি, তাঁর গলায় সোনার হার ছিল। সেই হারটিও ছিনতাই করে পালিয়েছে ওই দুষ্কৃতী দল। রজনীকান্তের আরও অভিযোগ, তাদের সঙ্গে শক্তি বাল্মিকী নামে এক দুষ্কৃতী ছিল। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে রাজ কলেজের অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডল বহিরাগত দুষ্কৃতীদের একটি তালিকা বর্ধমান থানায় জমা দিয়েছিলেন। তাতে শক্তির নাম ছিল।
অন্যদিকে, রজনীকান্তের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির সহযোগী ইয়াসিন হালদার। তাঁর বক্তব্য, রাত ১১টার দিকে চিত্তরঞ্জন হস্টেলে কয়েকজন আবাসিকদের সঙ্গে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। সেখানে রজনীকান্তের নাম রয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, এই বহিরাগত দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারধর করেছে। এমনকী তাঁর কাছে থাকা সরস্বতী পুজোর ২ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
বিবেকানন্দ হোস্টেলের মেস কমিটির অভিযোগ, শক্তি বাল্মিকী ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী, হস্টেলের ভিতরে হামলার চেষ্টা করেছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়েছেন। কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাড়াও জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছে।
এদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক অংশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খন্দেকার আমিরুল ইসলামের দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ছাত্র সংগঠন রয়েছে। এবার সেই জায়গা দখল করতে চাইছে সভাপতি স্বরাজ ঘোষের অনুগামীরা। সেই কারণেই এমন দ্বন্দ্ব। আমিরুল এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষ। তিনি দাবি করেছেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।