কালীপুজোর ভাসান দেখে ফেরার সময় বচসার জেরে মারধর। আর তার ফলে মৃত্যু হল এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুরের রামনগর মাঠপাড়া এলাকায়। মৃত যুবকের নাম সুমন দাস। উৎসবের মধ্যেই যুবকের এভাবে মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় তিন যুবককে গ্রেফতার ও একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ২ দিন ধরে নিখোঁজ স্ত্রী, গোটা শহরে তল্লাশির পর ঘরের সোফার মধ্যেই মিলল মৃতদেহ
পরিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে। কালীপুজোর ভাসান দেখে বাইকে করে তিনি ফিরছিলেন। সেই সময় রাত সাড়ে ১২ টা। ফলে রাস্তা ফাঁকা ছিল। যুবক একাই ছিলেন। ডাকঘরের দিক থেকে বাড়ি ফেরার সময় গোভাগার মোড়ের কাছে বেশ কয়েকজন যুবক মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের সঙ্গে ধাক্কা লাগে সুমনের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করলে যুবকদের সঙ্গে তার বচসা বাঁধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবকরা মারমুখী হয়ে উঠলে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সুমন। তিনি জোরে মোটরসাইকেল চালিয়ে এলাকা থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, পথের ধারে পড়ে থাকা ইট তুলে সুমনকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে মদ্যপ যুবকদের একজন। সেই ইটের আঘাতে বাইক থেকে পড়ে যান সুমন।
এরপর তাকে মারধর করা হয়। তারফলে তিনি গুরুতর আহত হন। ঘটনায় পথ চলতি কিছু মানুষ সুমনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর শান্তিপুর থানার পুলিশকে খরব দেওয়া হয়। সঙ্গেসঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যায় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানের অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে যাওয়া হয় শক্তিনগর হাসপাতালে। পরে সেখান কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল ও কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর গতকাল সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এরপর দেহ এসে পৌঁছয় শান্তিপুরের বাড়িতে।
এরপরেই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ, এলাকার বাসিন্দা সুভাষ সাহা, রাকেশ শেখ এবং চাঁদু শেখ নামে তিন যুবককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। অন্যদিকে শিবা সরকার নামে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সাগর দাস এখনও পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুবকের পরিবার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা এবং ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমন পেশায় একটি হোটেলের রাঁধুনি। ভিন রাজ্যে তিনি কাজ করতেন। উৎসবের জন্যই বাড়ি ফিরেছিলেন। আর তারপরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা।