উত্তপ্ত সন্দেশখালির আস্থা ফিরে পেতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চেষ্টার কসুর করছেন না রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তারা। কিন্তু তার পরেও বাদাবনের প্রান্তে পুলিশের ভাবমূর্তি যে বিন্দুমাত্র উদ্ধার হয়নি তার মালুম পাওয়া গেল রবিবার। এদিন তৃণমূলের পাশাপশি বিক্ষোভ হল পুলিশের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীদের দাবি, আন্দোলনকারীদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের ভুয়ো মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এমনকী অভিযোগ গ্রহণের জন্য পুলিশের তরফে ঘটা করে যে শিবির খোলা হয়েছে সেখানে গেলে গ্রামবাসীদের পুলিশ আধিকারিকরাই ধমকাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক মহিলা।
আরও পড়ুন: জনগর্জনে ডিগবাজি তৃণমূলের, অজিত মাইতিকে নিয়োগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদ থেকে সরাল দল
রবিবারও সন্দেশখালি যান রাজ্যের ২ মন্ত্রী সুজিত বসু ও পার্থ ভৌমিক। আর তারা সন্দেশখালিতে এসেছেন শুনে ফের মাথাচাড়া দেয় বিক্ষোভ। বেড়মজুর গ্রামের মহিলারা ১৪৪ ধারা ভেঙে ফের রাস্তায় নামে। হাতে ছিল আলতা দিয়ে ‘Go Back সুজিত বসু’ লেখা পোস্টার। সঙ্গে শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতেও পোস্টার দেখা যায় বিক্ষোভে। বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশ আধিকারিকরা এলে ফল হয় বিপরীত। বিক্ষোভ থামানোর বদলে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও কার্যক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ বিপরীত পদক্ষেপ করছে। শেখ শাহজাহান, শেখ সিরাজউদ্দিনকে গ্রেফতার করার বদলে তারা বিক্ষোভকারীদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। মহিলাদের দাবি, শুক্রবার তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে যারা ঘটনার সময় গ্রামেই ছিলেন না। এদিনও মহিলার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পুলিশের ওপর বিন্দুমাত্র আস্থা নেই তাঁদের।
এক মহিলা বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, ‘যখন মা - বোনেদের ইজ্জত নিয়ে খেলা হচ্ছিল তখন এই পুলিশ কোথায় ছিল। আজ আমাদের বলছে লিখিত অভিযোগ জমা দেও। আমার শ্বশুরমশাই লিখিত অভিযোগ নিয়ে ওদের ওই ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে একজন তাঁকে হাত ধরে থানায় নিয়ে যায়। তার পরে তাঁকে বলে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ২ মিনিটে চুপ করিয়ে দেব। এর পর ওই ক্যাম্পে আর কে যাবে?’
আরও পড়ুন: চিনকে ঠেকাতে বড় প্রকল্পে কাজ কেন্দ্রের, সেবক–রংপো রেল পথ তৈরিতে জোর
শুধু গ্রামবাসী নয়, সন্দেশখালিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদেরও আর পুলিশের ওপর ভরসা রয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এদিন বেড়মজুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতিকে তাড়া করেন গ্রামের মহিলারা। প্রাণে বাঁচতে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে তালা দিয়ে দেন অজিতবাবু। এর পর পুলিশ এসে শত বার অনুরোধ করলেও সন্ধে পর্যন্ত তালা খুলে বেরোননি তিনি। সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা এলাকা ছাড়লে তালা খুলে বেরোন তিনি। তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।