রাজ্যের দুই জোলার দু’টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে উঠল। ঘটনার জেরে রোগী ভরতি বন্ধের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন। একইসঙ্গে হাওড়া জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এই দুই বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভরতির প্রক্রিয়া।
সোমবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে বালি ও বেলঘড়িয়ার ওই দুই হাসপাতালকে এই নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পৃথক দু’টি হাসপাতালের বিরুদ্ধেই দু’ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এক হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। আরও গুরুতর অভিযোগ, হাসপাতালের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না করেই চিকিৎসা চালানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ পায় স্বাস্থ্য দফতর। অন্য হাসপাতালে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকের বদলে রোগী দেখেছেন হোমিওপ্যাথী চিকিৎসক! আবার সেই রোগীর মৃত্যুও হয়েছে।
সব চেয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বেলঘড়িয়ার মিডল্যান্ড নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। ওই হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন কাকলি দাস নামের এক রোগী। তাঁর পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়েই এই অনিয়মগুলো ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ে। ওদিকে স্বাস্থ্য দফতর অভিযোগ পায় যে, হাসপাতালের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না করেই করোনা রোগীদের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই হাসপাতালে।
এমনকী, ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক রাশিয়া থেকে এমবিবিএস পাশ করে আসলেও রাজ্যের যে পরীক্ষা দিতে হয়, সেটা না দিয়েই তিনি চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। নিয়মে রয়েছে, এ রাজ্যে বিদেশ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি পাশ করে এলে, মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের ওই পরীক্ষা দিতে হয়। অভিযোগ ওঠে ওই চিকিৎসক সেই পরীক্ষা না দিয়ে কাকলিদেবীর চিকিৎসা করেছিলেন।
এখানেই শেষ নয়, ওই নার্সিংহোমের আইসিইউয়ে কর্মরত এক নার্স বেঙ্গালুরু থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে নার্সিংয়ের কোর্স করেছেন। সেই প্রশিক্ষণের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মত কমিশনের।
আবার এদিকে বালির লাইফ কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে অন্য অভিয়োগ উঠেছে। ওই হাসপাতালে দেবী ঘোষ(৭৪) নামের এক করোনা রোগী মর্ডান মেডিসিনের এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ভরতি হন। অভিযোগ উঠেছে, তার বদলে ওই রোগীর চিকিৎসা করেন হোমিওপ্যাথী চিকিৎসক। ঘটনার পরে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। ওই বৃদ্ধার মৃত্যু শংসাপত্রে সই করেন হোমিওপ্যাথী চিকিৎসক। সেটা নিয়েই রোগীর আত্মীয়রা জেলা স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানান। এই ঘটনার জেরে জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।