বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > 'দাম ২৭ টাকা, মার্কার পেন দিয়ে ১২৭ করে ওষুধ বিক্রি', 'লুট' হাতুড়ে ডাক্তারের

'দাম ২৭ টাকা, মার্কার পেন দিয়ে ১২৭ করে ওষুধ বিক্রি', 'লুট' হাতুড়ে ডাক্তারের

অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তার । নিজস্ব ছবি।

গ্রামের মানুষদের বোকা বানিয়ে ওষুধের নির্ধারিত মূল্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে ক্রমাগত মানুষদের ঠকিয়ে চলেছিলেন এলাকারই ওই হাতুড়ে ডাক্তার। এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয়রা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

দাম রয়েছে ২৭ টাকা, অথচ সেই ওষুধ বিক্রি করছেন ১২৭ টাকায়। আবার ৮৭ টাকার ওষুধ বিক্রি করছেন ১৮৭ টাকায়। অর্থাৎ ওষুধের নির্ধারিত মূল্যের থেকে কখনও ১০০ টাকা বা তারও বেশি নিচ্ছেন হাতুড়ে ডাক্তার। গ্রামের নিরীহ মানুষকে বোকা বানাতে ওষুধের প্রিন্ট করা দামের উপরেই মার্কার পেনের সাহায্যে নিজের ইচ্ছামত দাম বসিয়ে দিয়েই নাকি সেগুলি বিক্রি করছেন ওই ডাক্তার। আর এভাবেই বহু মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকার প্রতারণা করেছেন। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পিপলা গ্রামের এক হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ডাক্তারের নাম বাবলু চক্রবর্তী। গ্রামবাসীদের তৎপরতায় প্রতারণার এই বিষয়টি সামনে এসেছে। সেই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: বাড়িওয়ালার টিউমারের অস্ত্রোপচার করতেই ধরা পড়ল শিলিগুড়ির ভুয়ো চিকিৎসক

অভিযোগ, গ্রামের মানুষদের বোকা বানিয়ে ওষুধের নির্ধারিত মূল্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে ক্রমাগত মানুষদের ঠকিয়ে চলেছিলেন এলাকারই ওই হাতুড়ে ডাক্তার। এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামেরই বাসিন্দা বাবলু চক্রবর্তী। মূলত চোখের চিকিৎসা করার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করতেন। ২৭ টাকা মূল্যের চোখের ড্রপ ১২৭ টাকায়, ৮৬ টাকার চোখের ড্রপ ১৮৬ টাকায় ও ৯২ টাকা মূল্যের ওষুধের দাম ১৯২ টাকা করে নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের বাড়িতে চেম্বার খুলে সারাদিন ধরে রোগী দেখেন বাবলু। চোখের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ তাঁর কাছে যেতেন। আর সেই সুযোগে প্রতারণা করতেন।  মার্কার পেন দিয়ে তিনি ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা রতন সিং ও সন্তোষ সিংএরকমই প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

তাঁদের দাবি, চোখে কনজাংটিভাইটিস ধরা পড়ে কয়েকদিন আগেই। চোখের চিকিৎসার জন্য পিপলা গ্রামের ওই হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যান। সেখানে চোখে একটি ড্রপ দেন বাবলু। সঙ্গে-সঙ্গে তাঁরা চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করেন। এরপরই তাঁদের চোখের বেশ কয়েকটি ওষুধ দেন ডাক্তার। তার দাম বাবদ ৫৬০ টাকা নিয়ে নেন। এরপর রতন সিং বাড়ি ফিরে দেখেন ওষুধের দাম তাঁর কাছ থেকে ৩০০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে। আর সেই দামের উপর পেন চালিয়ে দাম‌ বাড়ানো হয়েছে। এরপরে তিনি আবার বাবলুর কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি অস্বীকার করেন। খবর পেয়ে ওই চিকিৎসকের বাড়িতে ছুটে যান এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরাও অভিযোগ করেন, এর আগেও এইভাবে এই হাতুড়ে চিকিৎসক রোগীদের ঠকিয়ে বেশি দাম নিয়েছেন বিভিন্ন ওষুধের। এরপরই ওই চিকিৎসকের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কয়েকজন রোগী। 

যদিও নির্ধারিত মূল্য থেকে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন কোয়ার্ক ডাক্তার বাবলু চক্রবর্তী। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ অমল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘সরকারি নির্ধারিত মূল্য থেকে ওষুধের দাম বেশি নেওয়া গুরুতর অপরাধ। এছাড়াও ওই কোয়ার্ক ডাক্তারের কোন নির্দিষ্ট লাইসেন্স রয়েছে কিনা, তা আমাদের জানা নেই। আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাচ্ছি।’

বন্ধ করুন