বছরখানেক আগে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল বীরভূমের বগটুইয়ে। আবারও সেই স্মৃতি ফিরে এল বীরভূমে। ঘুমন্ত অবস্থায় থাকার সময় আগুন ধরিয়ে একটি পরিবারের সদস্যদের পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল। ঘরের বাইরে থেকে পেট্রোল ঢেলে একটি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তাতে মৃত্যু দু’জনের। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও একজন। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর থানার রায়পুর সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন গীত গ্রামে। এই ঘটনা আবারও বগটুইয়ের কথা মনে করিয়ে দিল।
আরও পড়ুন:মেলেনি ফ্ল্যাট কেনার টাকা, গায়ে গরম তেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারা হল গৃহবধূকে
পুলিশ ও স্থানীয় জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের একটি বাড়িতে রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন বাবা, মা এবং দুই সন্তান। সেই সময় আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এরমধ্যে তিন জনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। তাতে মৃত্যু হয়েছে রুপা বিবি (৩০) এবং তার ছোটো ছেলে আয়ান শেখর (৪)। বর্ধমানের একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন রূপার স্বামী সেখ তুতা (৩৮)।
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়া করে প্রতিদিনকার মতোই সকলে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। বাড়ির জানলা খোলা ছিল। ছোট ছেলে বাবা ও মায়ের সঙ্গেই ঘুমাতো। তবে বড় ছেলে শেখ রাজ অন্য ঘরে ঘুমায়। এরপর বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে পড়তেই কেউ বা কারা জানলা দিয়ে প্রথমে কেরোসিন তেল ছিটিয়ে দেয়। তারপরে আগুন ধরিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তবে সকলেই ঘুমিয়ে থাকায় টের পাওয়ার আগেই ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তখন বাড়ির সকলে চিৎকারে চেঁচামেচি শুরু করেন। আর্তনাদের আওয়াজ শুনে উঠে আসে পাশের ঘরে শুয়ে থাকা তাদের বড় ছেলে রাজ। সে চেঁচামেচি করতেই ওই বাড়িতে ছুটে আসে গ্রামের লোকজন। কিন্তু, ততক্ষণে তিনজনেই আগুনে ঝলসে যায় বলে জানান গ্রামবাসীরা।
ঘটনার পর তড়িঘড়ি তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে ছোটো ছেলে আয়ানের মৃত্যু হয়। ঠিক তার পরে মায়েরও মৃত্যু হয় বলে গ্রামবাসী সূত্রে খবর। যদিও এখনও হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন তুতা।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে বোলপুর থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছয়। এনিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি হয়। মৃত মহিলার বাবা শেখ করিম বলেন, ‘বড় নাতি ফোন করে আগুন লাগার খবর জানায়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে চলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আগুনে একেবারে ছাই হয়ে গিয়েছে। জামাই কারও সঙ্গে কোনওদিন ঝগড়া করেনি। কেউ বা কারা চক্রান্ত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইছি।’ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।