কিছুদিন আগেই প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ফেসবুকে লিখেছিলেন, যারা উত্তরবঙ্গকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করে উন্নয়নের কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তাদের একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই দীর্ঘ বছর হল উত্তরবঙ্গ ব্রহ্মপুত্র নদী কমিশনের অধীনে থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের নদীর বাঁধ নির্মাণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্রহ্মপুত্র নদী কমিশনের পক্ষ থেকে একটা পয়সাও পাওয়া যায়নি। এবার যা বোঝার বুঝে নিন…
এবার দেখে নেওয়া যাক বাস্তবটা ঠিক কী ?
পরিসংখ্য়ান বলছে ১৯৮০ সালে তৈরি হয়েছিল ব্রহ্মপুত্র বোর্ড। সেই বোর্ডের অধীনে অসমে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১২৮৬ কোটি টাকা। ২০০৬ সাল থেকে সিকিম পেয়েছে সব মিলিয়ে ৯১ কোটি টাকারও বেশি। অরুণাচল প্রদেশ পেয়েছে ১৯০ কোটি, মণিপুর পেয়েছে ৯০ কোটি, নাগাল্যান্ড পেয়েছে ৯৩ কোটি, ত্রিপুরা পেয়েছে ২৪ কোটি টাকা।
উত্তরবঙ্গ এই বোর্ড থেকে কত টাকা পেয়েছে?
উত্তরবঙ্গ এই বোর্ড থেকে পেয়েছে মাত্র ২২ কোটি টাকা। এদিকে উত্তরবঙ্গে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা নদীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য, বাঁধ তৈরির জন্য এই বোর্ড কতটা কাজ করেছে তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে। কোচবিহারে একবার বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু কাজ করেছিল। ব্যস। তারপর সেভাবে কিছু আর হয়নি।
এদিকে বার বারই অভিযোগ করা হয় যে উত্তরবঙ্গ থেকে প্রস্তাব সেভাবে কিছু না যাওয়ার জন্যই টাকা বরাদ্দ করা হয় না। তবে বাংলার সেচদফতর অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাইছে না। সব মিলিয়ে ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের কাছেও উত্তরবঙ্গের সমস্যাটা চিরদিন ব্রাত্য হয়েই থেকে গিয়েছে। সেভাবে বিশেষ গুরুত্ব পায়নি।
সম্প্রতি বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য উত্তরপূর্বের সঙ্গে উত্তরবঙ্গকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে ব্রহ্মপুত্র বোর্ড যেভাবে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে বলে অভিযোগ সেক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গকে উত্তরপূর্বের সঙ্গে সংযুক্ত করে কি কাজের কাজ কিছু হবে?
সুকান্ত মজুমদার এনিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'যদি পশ্চিমবঙ্গের অংশ হিসেবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ যুক্ত হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় যে প্রকল্পগুলি আছে, সেগুলির জন্য বেশি টাকা পাওয়া যাবে। সেইসঙ্গে এই (ব্যাপক) উন্নয়ন হবে। আমার মনে হয়, এতে রাজ্য সরকারের কোনও বাধা থাকবে না। আমার মনে হয়, রাজ্য সরকারের সহযোগিতা পাব।'