বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বির্তকে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন 'বোন এবং বন্ধু'। সেজন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ধন্যবাদ জানিয়ে লিখলেন, মমতার চিঠিতে ভরসা পেয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের শান্তিনিকেতনের 'প্রতীচী'-র মধ্যে বিশ্বভারতীর নিজস্ব জমি ঢুকে গিয়েছে। তা নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। অর্মত্যবাবুর মনীষীদের ‘আঘাত’ করার বিরুদ্ধে সরব হন। কড়া ভাষায় জানান, তাঁকে আঘাত করতে করতে বাংলা মনীষীদেরও ‘আঘাত’ করা শুরু হয়েছে। তা যে তিনি সহ্য করবেন, তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন। পরে ব্যক্তিগতভাবে অমর্ত্যবাবুকে চিঠি লিখে পাশে থাকার দেন মমতা। চিঠিতে জানান, অমর্ত্যবাবুর মতো মনীষীকে যে জমি বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে, তাতে তিনি ‘আহত’, মর্মাহত এবং বিস্মিত। একইসঙ্গে দেশের 'বিস্তারবাদী এবং অসহিষ্ণুতার' বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তাঁকে 'বোন এবং বন্ধু' হিসেবে বিবেচনাও করারও আর্জি জানান মমতা।
তারপর রবিবারের (২৭ ডিসেম্বর) তারিখ দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চিঠিতে অমর্ত্যবাবু লেখেন, ‘আপনার সমর্থনযোগ্য চিঠি পেয়ে আমি অত্যন্ত খুশি। আমি শুধুমাত্র অভিভূত নয়, একইসঙ্গে অত্যন্ত আশ্বস্ত যে তুমুল কর্মব্যস্ত জীবন সত্ত্বেও আক্রান্ত মানুষদের আশ্বস্ত করার জন্য সময় বের করেছেন। আপনার দৃঢ় কণ্ঠস্বর এবং চারপাশে কী ঘটছে, সে বিষয়ে আপনার যে পূর্ণ বোধগম্যতা আছে, তা আমার কাছে শক্তির উৎস। আপনার আন্তরিক চিঠিতে উষ্ণতার জন্য ধন্যবাদ। আপনাকে শুভেচ্ছা এবং স্নেহ জানাচ্ছি।’
ইতিমধ্যে জমি বিতর্ক নিয়ে নিজেও মুখ খুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তিনি জানান, প্রায় ৮০ বছর আগে শান্তিনিকেতনের বাড়ি 'প্রতীচী' তৈরি হলেও কোনওদিন অনিয়মের কথা জানানো হয়নি। এবারও তাঁকে চিঠি দিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কিছু জানানো হয়নি। শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে আইনি পথেই ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন অমর্ত্যবাবু। একইসঙ্গে জানান, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হতে পারে।