গত ২১ ফেব্রুয়ারি মাসে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল হাওড়ার চ্যাটার্জি হাটের বাসিন্দা ও জেলার সিপিএমের শাখা কমিটির সম্পাদক সৌমেন কুণ্ডুর। খড়গপুর শাখার আবাদা এবং সাঁকরাইল স্টেশনের মাঝে রেললাইন থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল শালিমার জিআরপি। ধৃত মহিলার নাম সোমা মন্ডল। সিপিএম নেতাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল শিবপুরের ব্যানার্জি লেন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সিপিএম নেতার রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুর পরে খুনের অভিযোগ এনেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। সেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ জানতে পারে, সোমার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল সৌমেন কুণ্ডুর। আট বছর ধরে চলছিল তাদের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সোমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল ছিল না। সংসারের অনটন মেটাতে গিয়ে একসময় সময় সঙ্গে তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। জানা গিয়েছে, সোমা মন্ডলও বিবাহিতা মহিলা। তার স্বামীর একটি চা এবং মিষ্টির দোকান রয়েছে শিবপুর ট্রাম ডিপোর কাছে। সিপিএম নেতা সোমাকে নানাভাবে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। সেই সূত্রেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, ওই সিপিএম নেতা নিজের বাড়ির কাছে সোমাকে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে দিয়েছিলেন। কিন্তু, সোমার পরিবারে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর সেই সম্পর্ক আর টিকিয়ে রাখতে চাননি সোমা। এরপরে দুজনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। দুজনের মধ্যে কথাবার্তা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই নিয়ে মানসিক অবসাদের মধ্যে পড়েছিলেন ওই সিপিএম নেতা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি অন্তত ৫ বার তিনি ট্রেনে করে রামরাজাতলা এবং আবাদা স্টেশনের মধ্যে যাতায়াত করেছিলেন। অবশেষে তিনি ট্রেনে গলা দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন। সোমার সঙ্গে ওই সিপিএম নেতার যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তা তার মোবাইলের কল লিস্ট দেখে জানা গিয়েছে। রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার চন্দ্রশেখর দাস জানিয়েছেন, ঘটনার ঠিক আগেই ১০ থেকে ১৫ বার ওই সিপিএম নেতা সোমাকে ফোন করেছিলেন। পাশাপাশি পাড়ার ক্লাব থেকেও সোমার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানা যায়।