আগেই জানিয়েছিলেন। সেই মতো ঘোষণা করলেন নতুন দলের। আর তারপরেই ভেঙে টুরকো টুকরো হয়ে গেল বিমল গুরুংদের তৈরি রাজনৈতিক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সাড়ে তিন বছর পর গুরুংপন্থী এবং বিনয়পন্থী মোর্চা তৈরি হয়েও অবশেষে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে এক হয়েছিলেন বিমল গুরুং–বিনয় তামাং। কিন্তু তারপরও টেকানো গেল না শৈলশহরের জিজেএম–কে। কারণ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দলের ঘোষণা করে ফেললেন অনীত থাপা। তাঁর তৈরি নতুন দলের নাম—ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম।
আজ পাহাড়ের বুক চিড়ে হিলকার্ট রোডে, জিমখানা ক্লাবে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার অফিসে জমজমাট ব্যাপার হয়েছিল। অডিটোরিয়ামে বহুজন সমাগম। আর প্রজেক্টরে দেখানো চলছে নতুন রাজনৈতিক দলের ইতিবৃত্ত। দলীয় পতাকা থেকে প্রতিষ্ঠাতার পরিচয় এবং লক্ষ্য—সবই দৃশ্য–শ্রাব্য মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। বিজিপিএম বা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার পতাকার রং হলুদ–ধূসর–লালচে। এখানে বোঝানো হয়— হলুদ রং পবিত্রতা, মানবতা, ধৈর্যের প্রতীক। ধূসরের অর্থ নিরপেক্ষতা। এবং লালচে রং সাহস, ঔদার্য এবং সামাজিক বদলের প্রতিচ্ছবি। এই পতাকায় আরও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে– হিমালয় পর্বত, তিস্তার নীল জল, চা–পাতা আর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী অস্ত্র খুকরি। এখন দেখার এই প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কিভাবে এগিয়ে যায়।
বিজিপিএম সূত্রে খবর, এখানে মোট ৬০ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হয়েছে। এই নতুন পথ বেছে নেওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণু প্রসাদ শর্মা। তিনি বলেন, ‘অনীতের নতুন দলের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই। পাহাড়ের গোর্খারা ১৯০৭ সাল থেকে যে স্বপ্ন দেখেছে নতুন দল সেই স্বপ্ন যাতে বোঝে এবং স্বপ্নপূরণ করে। তবে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির উচিত এক হয়ে পাহাড়ের জন্য লড়াই করা।’
উল্লেখ্য, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কয়েক বছর আগে জনপ্রিয় নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রী তৈরি করেছিলেন নতুন দল—জন আন্দোলন পার্টি (জাপ)। একটি নির্বাচনে লড়াই করেই এখন হারিয়ে গিয়েছে। এবার অনীত থাপার দলের ভবিষ্যৎ কী হয় সেটাই দেখার। শৈলশহরে এই নতুন দল তৈরি হওয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা একটু গলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।