মিলন মাঝির পর কলকাতা থেকে পায়ে হেঁটে লাদাখ পৌঁছলেন আরও এক বাঙালি যুবক নির্মল ওঁরাও। শুধু লাদাকই পৌঁছননি লাদাখের দেশের সর্বোচ্চ সড়ক উমলিং লাতেও হাঁটলেন। কলকাতা থেকে ২৭০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তিনি লাদাখের দেশের সর্বোচ্চ সড়ক উমলিং লাতে পৌঁছেছেন। এই দীর্ঘ যাত্রাপথে তাঁর সময় লেগেছে ৭৫ দিন। উল্লেখযোগ্য ভাবে এ বছর স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি। নির্মলের কথায়, ‘স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির কথা ভেবে ৭৫ দিনে দেশের সর্বোচ্চ সড়ক উমলিং লাতে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
উত্তর দমদম পুরসভার বিরাটির পশ্চিমবঙ্গনগরের বাসিন্দা বছর ২৪-এর যুবক নির্মলের যাওয়ার পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। দীর্ঘ পথে তাঁকে একাধিক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি নির্মলের সঙ্গে ছিল জাতীয় পতাকা শাটা রুকস্যাক আর হাজার তিনেক টাকা। উত্তরপ্রদেশের কল্যাণপুর থেকে সিতাপুর পৌঁছানোর পথে রাতে ধাবা থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর সারারাত ধরে ৬২ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটার পর সিতাপুরের একটি হোটেলে পৌঁছেছিলেন। কলকাতা থেকে ১৯ মে যাত্রা শুরু করেছিলেন নির্মল। উমলিং লায়ের উচ্চতা ১৯০২৪ ফুট। যা এভারেস্টের বেসক্যাম্পের থেকেও উঁচু। সেখানে পায়ে হেঁটে উঠতে গেলে যথেষ্টই বেগ পেতে হয়। তার পরিকল্পনা ছিল কলকাতা থেকে পায়ে হেঁটে পাঁচ রাজ্য হয়ে লেতে পৌঁছনোর। কিন্তু পরে উমলিং যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
৭৫ দিনে সেখানে তিনি পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন। লাদাখের সৌকার থেকে মাহেব্রিজ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তা জনমানবহীন বললেই চলে। সেই পথে হাঁটতে গিয়ে তাকে একের পর এক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রথম দিনই তার জল এবং খাবার প্রায় শেষ হয়ে যায়। দ্বিতীয় দিনে ছিল একটি জলের বোতল আর একটি বিস্কুটের প্যাকেট। পায়ে ফোঁস্কা পড়ে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তারপরেও তিনদিন হেঁটে বিরাটির এই যুবক সেখানে পৌঁছন। তার কথায়, ‘মানুষ যখন সম্পূর্ণ একা থাকে তখন কীভাবে লড়তে হয় সেটাই শিক্ষা পেলাম।’ নির্মলের কথায়, ‘পরিবেশকে আমরা নষ্ট করছি। তাই স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে সবুজ বার্তা নিয়ে হাঁটার কথা ভেবেছিলাম।’ উত্তর দমদম পৌরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস নির্মলের প্রশংসা করে বলেন, ‘ওর জন্য আমরা গর্বিত। প্রশাসন সব রকমভাবে ওকে সাহায্য করবে।’