এবার সরাসরি দলের মধ্যে ফাটল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গেলেন পুরসভার কোচবিহার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান। এই ঘটনায় তোলপাড় হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতি। এমনকী রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ এলেও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে কোনও মিটিং–মিছিলে যোগ দেবেন না বলে ঘোষণা করলেন কোচবিহার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ভূষণ সিং। প্রয়োজনে দল ছাড়তেও তিনি রাজি বলে জানিয়েছেন ভূষণবাবু। তৃণমূল ছাড়ার এমনিতেই হিড়িক পড়ে গিয়েছে। তার উপর এখন কেউ বিদ্রোহ করলে দল বোঝাবার রাস্তা নিয়েছে। সেখানে ভূষণ সিংয়ের এই বিদ্রোহে দল খানিকটা অস্বস্তিতে পড়লই বলা যায়। বিশেষত কয়েকদিন আগে সেখান থেকে ঘুরে এসেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল থেকে একের পর এক হেভিওয়েট নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে শুরু করায় সারা রাজ্যের পাশাপাশি কোচবিহারেও জেলা তৃণমূল টলমল করছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ভূষণবাবুর এই ধরনের মন্তব্যে তৃণমূলের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। পার্থ–ভূষণের রাজনৈতিক দূরত্ব বেড়েছে। যা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
সূত্রের খবর, কোচবিহারের রাসমেলা মাঠে ১৬ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় মূলমঞ্চে জায়গা না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন কোচবিহার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ভূষণ সিং। কোচবিহার শহরের প্রথম নাগরিক হয়ে মূলমঞ্চে জায়গা না পেয়ে অপমানিত বোধ করে মমতার সভা ছেড়ে চলে যান ভূষণবাবু। মূলমঞ্চে জায়গা না পাওয়ার পিছনে দলের জেলা সভাপতি পার্থর কারসাজি রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছিলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, পার্থকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে না সরালে তৃণমূল কোচবিহারে নয়টি আসনের মধ্যে নয়টিতেই হারবে। বিষয়টি জানিয়ে তিনি দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে চিঠি পাঠাবেন বলেও জানিয়েছিলেন। যা নিয়ে কোচবিহারে তৃণমূলের অন্দরে ঝড় উঠেছে।
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘ভূষণ সিংয়ের বাড়িতে গিয়ে আমি তাঁকে বলেছি, তাঁর মনের জ্বালা আমরা বুঝি। এতে যা প্রতিক্রিয়া দেওয়ার তিনি দিয়েছেন। কিন্তু আর যেন কোনও প্রতিক্রিয়া না দেন।’