ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকজনকে মারধরের ঘটনায় সম্প্রতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত। তারপরে ছেলেধরা গুজব রুখতে বিভিন্নভাবে প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু, কোনওভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এই গুজব। আবারও ছেলেধরা সন্দেহে উত্তর ২৪ পরগনাতেই এক যুবককে গণপিটুনির অভিযোগ উঠল। এর ফলে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই যুবক। প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার হাসপাতালে। আক্রান্ত যুবকের নাম নাজির হুসেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের রুইয়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: শিশু চুরির কোনও ঘটনা ঘটেনি, পুরোটাই গুজব, সচেতন করতে প্রচারে নামল বারাসত পুলিশ
জানা যাচ্ছে, পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা নাজির হুসেন (৩২)। ইদ উপলক্ষে তিনি মোহনপুর পঞ্চায়েতের কাঠালিয়ায় একটি মেলায় এসেছিলেন। অভিযোগ, মেলায় ঘোরাঘুরি করার সময় সেখানে কয়েকজন যুবক তাকে ঘিরে ধরে এবং ছেলেধরা সন্দেহ করে। এরপরই শুরু হয় গণপ্রহার। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে বারাকপুরের বি এন বসু হাসপাতাল ও পরে কলকাতা আরজিকর হাসপাতালের তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। নাজিরের এলাকার লোকজন খবর পেয়ে মোহনপুর থানায় এসে বিক্ষোভ দেখায় এবং অভিযোগ দায়ের করে। তারা দোষীদের শাস্তি দাবি জানিয়েছেন। এলাকার মানুষের দাবি, নাজির একজন ভালো ছেলে। এভাবে ছেলেধরা অপবাদ দিয়ে মারধর করা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। এলাকায় উত্তেজনা থাকার ফলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
নাজির যে ছেলেধরা সে কথা মানতে নারাজ তার গ্রামের মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দা অতনু দাস ওই যুবককে মারধর করার জন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানান, কেন তাকে মারধর করা হল? তা তদন্ত করা উচিত। তার অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিভাবে নাজিরকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। তার দাবি নাজিরকে মারধরের কিছু ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। তাতে বেশ কয়েকজনের নামও পাওয়া গিয়েছে। তা পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনায় তদন্ত করছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অন্যদিকে, বারাসতে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর এবং গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ তাদের আদালতে তোলা হয়।