রাত পোহাতে না পোহাতে অনুব্রত মণ্ডলকে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে বদলে গেল রাজ্য পুলিশের অবস্থান। আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানাতেই রাজ্য পুলিশের দাবি, অনুব্রতকে তারা নিরাপত্তা দেবেন না এমন কথা কখনও বলেননি। বরং ভুল রয়েছে জেল কর্তৃপক্ষের আবেদনে। আর রাজ্য পুলিশ আর জেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে এই চিঠি চিঠি খেলা নিয়ে বিশেজ্ঞদের মত, অনুব্রতকে আইনি সুরক্ষাকবচ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে ইচ্ছা করে সময় নষ্ট করা হচ্ছে।
শনিবার কলকাতা হাইকোর্ট অনুব্রতর দিল্লিযাত্রা রুখতে কোনও রক্ষাকবচ দিতে অস্বীকার করে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে, অনুব্রতকে প্রথমে আসানসোল থেকে কলকাতায় কোনও কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত হাসপাতালে আনতে হবে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে সুস্থ বলে ঘোষণা করলে তবেই তাঁকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে ইডি। আর অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে বিমানে করে।
আদালতের নির্দেশের কথা আসানসোল জেলকে শনিবারই চিঠি দিয়ে জানায় ইডি। এর পর আসানসোল কমিশনারেটকে চিঠি দিয়ে অনুব্রতর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলে কারা কর্তৃপক্ষ। ঘণ্টা তিনেক পরে পুলিশের তরফে পালটা চিঠি দিয়ে জানানো হয়, কোনও ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা তারা করতে পারবে না। এর পরই বিপাকে পড়ে কারা কর্তৃপক্ষ। পুলিশের অবস্থানের কথা ইডিকে জানায় তারা। কিন্তু ইডির তরফে পালটা কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, অনুব্রতর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশকেই। ইডির যুক্তি, এর আগে সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য পুলিশ। তাহলে এখন নয় কেন?
এর পরই সোমবার সকালে কারা বিভাগের পদস্থ আধিকারিকরা রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পর জানা যায়, রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আসানসোল জেলের তরফে করা আবেদনে ত্রুটি ছিল। ওই আবেদনে অনুব্রতকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তার কোনও উল্লেখ নেই। অনুব্রতকে কোন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। তাঁকে কি বিমানবন্দর পর্যন্ত নিরাপত্তা দিতে হবে না কি দিল্লি পৌঁছে দিয়ে আসতে হবে, তার কোনও উল্লেখ নেই আবেদনে। ফলে নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করে পুলিশ।
ওদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুব্রতর সামনে দিল্লি যাত্রা রুখতে এখনো সুপ্রিম কোর্টের দরজা খোলা রয়েছে। সেখানে আবেদন করার ব্যপারে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করছেন তিনি। তাই চিঠি চিঠি খেলে কিছু সময় নষ্ট করতে চাইছে পুলিশ।