অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়েরকারী তৃণমূল নেতা শিবঠাকুর মণ্ডলের মন্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিবঠাকুরবাবু যা বলেছেন তার সঙ্গে মিলছে না ঘটনাক্রম ও FIR-এ দেওয়া তথ্য। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে, তবে পরিকল্পনামাফিক তাঁকে দিয়ে FIR করিয়েছে তৃণমূল?
বুধবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিবঠাকুরবাবু জানান, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে তৃণমূলের দুবরাজপুর পার্টি অফিসে ডেকে গলা টিপে ধরেন অনুব্রত। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২৭ মার্চ। কিন্তু শিবঠাকুর মণ্ডলের করা FIR-এ দেখা যাচ্ছে, ঘটনাটি মে মায়ে ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এমনকী সোমবার FIR দায়েরর পর থেকে পুলিশ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলেও স্বীকার করেছেন অভিযোগকারী তৃণমূল নেতা। তিনি স্বীকার করেছেন, অভিযোগ দায়েরের পর ৭২ ঘণ্টা কাটতে চললেও এখনো তাঁর বয়ান রেকর্ড করেনি পুলিশ।
সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তিনি গীতা অধ্যয়ন করেন, তাই কাউকে ভয় পান না। তাহলে অভিযোগ দায়ের করতে এত দিন লাগল কেন? জবাবে তিনি জানিয়েছেন, ভয়ে এতদিন অভিযোগ করিনি। এখন উনি জেলে রয়েছেন তাই অভিযোগ করেছি। সঙ্গে তিনি জানান, টেনশনে বাড়িল লোকদেরও ঘটনার কথা জানাননি তিনি।
সোমবার অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরায় ইডির আবেদনে ছাড়পত্র দেয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সেদিনই তাঁর বিরুদ্ধে দুবরাজপুর থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল। মঙ্গলবার অনুব্রতকে আসানসোল জেলে এসে গ্রেফতার করে বীরভূম পুলিশ। তাঁকে দুবরাজপুর আদালতে পেশ করেন তদন্তকারীরা। আদালতে জামিনের আবেদন করেননি অনুব্রত। ফলে তদন্তকারীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে অনুব্রতকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান বিচারক। ওদিকে অনুব্রতর বিরুদ্ধে FIR করায় শিবঠাকুর মণ্ডলকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল।
বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা রুখতে পরিকল্পনা করে দলীয় কর্মীকে দিয়ে FIR করিয়েছে তৃণমূল। তার পর লোক দেখানোর জন্য সেই কর্মীকে বহিষ্কার করেছে তারা।