সম্প্রতি সংগঠন সংক্রান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকের তোরণে কোথাও ছিল না অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। এমনকী আলোচনাতেও কেষ্ট মণ্ডলের প্রসঙ্গ বিশেষ ওঠেনি। তবে বুধবার বীরভূমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। সেই সভায় যাওয়ার জন্য দীর্ঘ মিছিল বের হয় বোলপুরে। বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে মমতার সভা। এদিকে সেই সভার মিছিলে নেতাদের আপত্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কর্মীদের হাতে হাতে ঘুরছে অনুব্রতর ছবি। তৃণমূল নেত্রীর পাশাপাশি কেষ্ট মণ্ডলের ছবি নিয়েও মিছিলে উপস্থিত হয়েছিলেন সাধারণ তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের হাতে জ্বলজ্বল করছে কেষ্ট মণ্ডলের ছবি। কার্যত এদিন তাঁরা জানিয়ে দিলেন জেলবন্দি থাকলেও বীরভূমে তৃণমূলের রাজনীতিতে এখনও শেষ কথা অনুব্রতই।
সম্প্রতি কেন তৃণমূলের কর্মসূচিতে অনুব্রতর ছবি থাকছে না সেই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, যিনি আসছেন না তাঁর ছবি থাকবে কেন? তাকে ষড়যন্ত্র করে আটকে রাখা হয়েছে। তবে অনেকের মতে, এদিনের সভাতেও সশরীরে থাকতে পারবেন না কেষ্ট মণ্ডল। কিন্তু তিনি সশরীরে না থাকলেও কর্মীদের কাছে এখনও কেষ্ট মণ্ডলের গ্রহণযোগ্যতা যে কোনও অংশে কমেনি এদিন সেটাই সামনে আসে।
এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে এক কর্মী বলেন, আমরা মমতা ব্যানার্জির সৈনিক। আমাদের নয়ণের মণি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন।
গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলকে কার্যত নয়নের মণি বলে উল্লেখ করছেন তৃণমূলের সাধারণ কর্মীরা। এদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, অনুব্রত মণ্ডল বিরোধী একাধিক নেতৃত্বকে সম্প্রতি দলের কোর কমিটিতে রাখা হয়েছে। তার ছবি ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও লাগাম টানা হয়েছে দলের অন্দরে। প্রশ্ন উঠছিল তবে কি অনুব্রতর থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছে দল? তবে বাস্তবে দেখা গেল পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। দলের সাধারণ কর্মীদের মনে তাঁর উপস্থিতি এখনও উজ্জ্বল। তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এখনও জেলবন্দি কেষ্ট মণ্ডল। তাঁর ভোকাল টনিক আর বিশেষ শুনতে পারছেন না কর্মীরা। গুড় বাতাসা, চড়াম চড়াম দাওয়াই আর শোনা যায় না বীরভূমে। তবে তিনি গরাদের অন্তরালে থেকেও মমতার সভায় আছেন ভীষণভাবে। মমতা, অভিষেকের ছবির পাশেই আছেন অনুব্রত। তিনি এখনও দলের জেলা সভাপতি। সেক্ষেত্রে তাঁর ছবি মিছিলে রাখার ক্ষেত্রে যে স্বতস্ফূর্ততা দেখিয়েছেন কর্মীরা তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।