গরু পাচারকাণ্ডে নেমে ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের হিসাব বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। শান্তিনিকেতনে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে অনুব্রতর নামে। খুবই কম দামে এই সব জমি নিজের নামে করেছিলেন কেষ্ট। আর এবার ইডি জানতে পেরেছে, ভিনরাজ্যেও বিপুল সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রতর। তদন্তকারীদের অনুমান, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশেও বিপুল সম্পত্তি আছে অনুব্রতর।
ইডি সূত্রে জানানো হয়, অনুব্রত মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসবই ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখা হয়েছে। এছাড়া অনুব্রতর আত্মীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেখান থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশে বিনিয়োগ রয়েছে অনুব্রতর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তদন্তকারী আধিকারিক দাবি করেছেন, ঝাড়খণ্ড ও বিহারে হাওয়ালার মাধ্যমে পাথরখাদানে টাকা বিনিয়োগ করেছেন অনুব্রত। তাছাড়া উত্তরপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডে ফ্ল্যাট, জমি কিনেছেন তিনি।
এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে নয়া তদন্ত শুরু করেছে ইডি। তৃণমূল নেতা কতজনকে স্কুল ও বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখছে ইডি। এমনকী তাঁদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কেষ্ট আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন কি না সেটা জানতে তদন্ত করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, মেধা তালিকায় নাম নেই, অথচ চাকরি পেয়েছেন, এমন বেশ কয়েকজন প্রার্থীর তালিকা ইডি’র হাতে এসেছে। আবার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডি জানতে পেরেছে, প্রত্যেক জেলা থেকেই প্রার্থীদের নামের তালিকা এসেছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের কাছে। সেই তালিকায় বীরভূম জেলার নামও আছে। এমন সব তথ্য যাচাই করে অনুব্রতর বিরুদ্ধে আরও প্রমাণ একত্রিত করছেন তদন্তকারীরা।
সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের সম্মতি নিয়েই তালিকা তৈরি করে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর মনোনীত প্রার্থীরা সকলেই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। মেধা তালিকায় তাঁদের নাম ছিল না। এঁদের মধ্যে অনেকেই এখনও চাকরি করছেন সরকারি বিভিন্ন দফতর এবং প্রতিষ্ঠানে। শুধু সরকারি স্তরে নয়, বীরভূমে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্ক–সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও নিজের পছন্দের লোককে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন অনুব্রত।