বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে। তাহলে সংগঠন চলবে কী করে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয় জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে। সেখানে ঠিক হয়, বীরভূম জেলায় তাঁকে সভাপতি রেখেই আপাতত বিধায়ক, সাংসদ এবং নেতা–কর্মীরা সংগঠন মজবুতের কাজ করে যাবেন। আর পূর্ব বর্ধমানের তিনটি বিধানসভা এলাকা যা অনুব্রত মণ্ডল দেখতেন (মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম এবং আউশগ্রাম) সেগুলি এখন থেকে দেখবেন ওই জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি কেষ্টর ডানায় হাত পড়ল? কেষ্টর ডানা কি ছাঁটা হল? জানা গিয়েছে, বীরভূম ছাড়া এই তিনটি বিধানসভা এলাকার সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখাশোনা করতেন অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় তিনি গ্রেফতার হতেই এইসব এলাকার নেতাদের পথে নেমে সরব হতেও দেখা গিয়েছিল। ফলে এখানে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই সেখানে পরিবর্তন আনা হল। নিজের জেলায় তাঁকে রেখে দিয়ে এই তিনটি বিধানসভা এলাকা থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল।
কোথায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়? সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় এবার থেকে অনুব্রতর হাতে থাকা পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট আর কেতুগ্রাম দেখবেন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে এটা বলে দেওয়া হয়েছে, এই তিন এলাকার নেতারা পূর্ব বর্ধমান এবং বীরভূম, দুই জেলার নেতৃত্বের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখেই কাজ করবেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের নেতাদের প্রায় চার ঘণ্টা ৪০ মিনিট বৈঠক হয়। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলকোটে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বিধায়ক থাকাকালীন অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে অম্ল–মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তা নিয়ে দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আর আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম এলাকার নেতারাও অনুব্রত মণ্ডলের একছত্র আধিপত্য মেনে নিতে চাইছিলেন না। এবার সুযোগ বুঝে এইসব এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে সূত্রের খবর।