রক্ষী থেকে বন্দি—সকলের সঙ্গেই খোশ মেজাজে গল্প করলেন অনুব্রত মণ্ডল। মাঝে মধ্যে হাসি–মশকরাও করতে দেখা গেল তাঁকে। আর তা দেখেছেন স্বয়ং কারারক্ষীরা। এমন মানুষ যে জেলে থাকতে পারেন তা তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না। নতুন কোনও বন্দি এলে তাঁর বিস্তারিত তথ্য সংশোধনাগারের খাতায় লিখতে হয়। তিনিও উত্তর দিচ্ছিলেন। শেষে যখন শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে চাওয়া হয়, তিনি মজা করে বলেন, ‘আপনি আমাকে যতদূর পাশ করাতে পারবেন’। তখনই ওঠে হাসির রোল। এসবের মধ্যেই রবিবার পাতে মাংস পেলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। প্রতি রবিবার জেলে খাসির মাংস দেওয়া হয়। তা খেয়ে আপ্লুত কেষ্ট মণ্ডল।
ঠিক কী করছেন অনুব্রত মণ্ডল? সংশোধনাগার সূত্রে খবর, আপাতত অনুব্রত রয়েছেন হসপিটাল ওয়ার্ডে। সেখানে আরও সাত বন্দি রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। কখনও তাঁকে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলতে শোনা যাচ্ছে, কেসটাতে জোর নেই। কিছুই হবে না। সিবিআই তো, তাই সহজে জামিন হচ্ছে না। আবার অন্যদের সমস্যাও শুনছেন মন দিয়ে। এমনকী কাউকে কাউকে পরামর্শও দিচ্ছেন। এখন বন্দিদের মধ্যেও তাঁকে নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে। তবে দিনের বেলায় খোশ মেজাজে থাকলেও রাত তিনি নিদ্রাহীন থাকছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? কৌশিকী অমাবস্যার রাতে খাসির মাংস খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে কেষ্টর। যদিও সেদিন জেলে কষ্ট করেও কেষ্ট মেলেনি। এখানে ৩৪ জন মহিলা বন্দি–সহ ৫২৪ জন বন্দির জন্য ৪৪ কেজি মাংস কেনা হয়। সেই মাংসের ঝোল এবং ভাতই খেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। আজ, সোমবার অনুব্রতকে জেরা করতে পারে তদন্তকারী আধিকারিকরা। তাই আসানসোল সংশোধনাগারে যেতে পারে সিবিআই। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর জেল হেফাজত শেষ হচ্ছে তাঁর।
কখন ঘুমোচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল? সূত্রের খবর, রাত হলেই তিনি চুপচাপ হয়ে যাচ্ছেন। সংশোধনাগারে ৯টার মধ্যে রাতের খাবার খেতে হয়। তারপর বেশিরভাগ বন্দিই শুয়ে পড়ে। তখন অনেকটা একা হয়ে যান কেষ্ট মণ্ডল। সংশোধনাগারের নিয়ম, রাতে কোনও সেল বা ওয়ার্ডে আলো বন্ধ হবে না। তাই আলোর মধ্যেই শুতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু রাত আড়াইটের আগে কিছুতেই ঘুমাতেই পারছেন না। অনুব্রত মণ্ডল সংশোধনাগারে আসার পরই সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট কৃপাময় নন্দী সিএমওএইচকে চিঠি লেখেন। তাতে তিনি অনুরোধ করেন, প্রত্যেকদিন একজন চিকিৎসককে সংশোধনাগারে পাঠিয়ে বন্দিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করুন।