কয়েকদিন আগে মেয়ে সুকন্যাকে দেখে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেছিলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। মেয়ে জেলে আছে—এটা মেনে নিতে পারছেন না বাবা অনুব্রত। তাই চাপ সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর আইনজীবী আর্জি জানান জেল কর্তৃপক্ষকে। সেই আর্জি মেনে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল অনুব্রত মণ্ডলকে। এবার মঙ্গলবার জিবি পন্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। অনুব্রত মণ্ডলের শরীর আগের থেকেও খারাপ হচ্ছে বলে খবর। শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, হার্টে ৭৫ শতাংশ ব্লকেজ, লিভার খারাপ এমনকী দু’বেলা ইনসুলিন নিতে হচ্ছে।
কেন হঠাৎ শরীর খারাপ হল? জেল সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডল খাওয়াদাওয়া ঠিক করে করছেন না। সামান্য ডাল–তরকারি দিয়ে দেড়টা রুটি খাচ্ছেন। তাতে শরীর ভেঙে যাচ্ছে। হাসপাতালে তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। সেখানে নানা সমস্যা ধরা পড়েছে। তিহাড় জেলে মেয়ের সঙ্গে দু’দিন আগে আধ ঘণ্টা কথা হয়। তারপর থেকেই তিনি আরও ভেঙে পড়েন। এবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন। মেয়েকে তিনি তখন বলেছিলেন, ‘তোর দিল্লি আসা উচিত হয়নি।’ আসলে অনুব্রত মণ্ডল জেলে মেয়ের উপস্থিতি মেনে নিতে পারেননি। তাই খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। অথচ অসুখের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন। সেই মতো খাবার শরীরে না গেলে দুর্বলতা আসবেই।
আর কী জানা যাচ্ছে? ইতিমধ্যেই মেয়ে সুকন্যা জামিনের জন্য আবেদন করেছেন। সেখানে তিনি ইডির চার্জশিটকে হাতিয়ার করেছেন। তাঁর অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা যে গরুপাচার করে এসেছে এমন কোনও উল্লেখ নেই চার্জশিটে। তাই সেটা উল্লেখ করেই জামিনের আবেদন করা হয়েছে। যদিও এখনও জামিন মেলেনি। আগামী ২৬ মে নয়াদিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে জামিনের শুনানি হবে। তার মধ্যেই তিনি খবর পেয়েছেন বাবা অনুব্রত মণ্ডল অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফলে তাঁর একটা উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে বলে খবর।
শেষ কথা কী হয়েছিল? মেয়ে সুকন্যার সঙ্গে যেদিন দেখা হয়েছিল বাবা অনুব্রত মণ্ডলের সেদিন তাঁকে অনুব্রত বলেছিলেন, ‘চিন্তা করিস না, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ কিন্তু চিন্তা বেড়েই গেল সুকন্যার। কারণ বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সব ঠিক এখনও হয়নি। বরং পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। জেলা আসার পর থেকে মেয়ে বাবার শরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন নিয়মিত। বাবা কেষ্টকে সময় মতো ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিতেন সুকন্যা। কিন্তু এবার সেই বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন বলে খবর।