এবার ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন ভাঙড়ের 'তাজা' নেতা আরবুল ইসালম। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পোলেরহাট থানায় শওকতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন আরাবুল।
পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হল কেন?
যত দূর জানা গিয়েছে, বুধবারের 'হামলা'র কারণেই এই পদক্ষেপ করেছেন আরাবুল ইসলাম। উল্লেখ্য, বুধবার (১ জানুয়ারি, ২০২৪) ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই বিশেষ দিনেই একদা নিজের গড়ে আক্রান্ত হন আরাবুল ইসলাম। তাঁর গাড়ি পর্যন্ত ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
সূত্রের দাবি, এই ঘটনা আদতে ভাঙড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই ফসল। এবং এই দ্বন্দ্ব আদতে আরাবুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে শওকত মোল্লা ও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজনের বিবাদের প্রকাশ্য সংঘাত।
এমনকী, আরাবুল নিজেও বুধবারের ওই হামলার জন্য শওকত মোল্লার অনুগামীদেরই কাঠগড়ায় তুলেছেন। সূত্রের খবর, বুধবারই এই ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হন আরাবুল ইসলাম। ওই দিন আরাবুল ও তাঁর ছেলে হাকিবুল স্থানীয় পোলের হাট থানায় শওকত মোল্লা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
আরাবুলের অভিযোগপত্রে কার কার নাম রয়েছে?
জানা গিয়েছে, আরাবুল ও হাকিবুল পুলিশের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তাতে কেবলমাত্র শওকত মোল্লাকেই কাঠগড়ায় তোলা হয়নি। অভিযোগ করা হয়েছে আরও একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। টিভি নাইন বাংলা-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযুক্তদের সেই তালিকায় রয়েছে নাম রয়েছে - স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শেখ সাবির আলি-সহ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মোমিনুল ইসলাম এবং বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যের।
প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন আরাবুল?
সংশ্লিষ্ট অভিযোগপত্রে আরাবুল জানিয়েছেন, বুধবার হামলার ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত। তাঁর আশঙ্কা, তাঁকে এভাবে খুনও করা হতে পারে! আরাবুল সেখানে লিখেছেন, 'এই সমস্ত দুষ্কৃতীরা যখন-তখন আমার উপর আক্রমণ করতে পারে। সেই কারণেই আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।'
উল্লেখ্য, তিনি যে এই ধরনের 'প্রাণঘাতী হামলা'র আশঙ্কা করছেন, একথা আরাবুল ইসলাম আগেও জানিয়েছেন। সম্প্রতি হামলার আশঙ্কা থেকেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। নিজের নিরাপত্তা চেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রুজু করেছিলেন আরাবুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ভাঙড়ে আরাবুল বনাম শওকতের এই বিবাদ বা দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। বহু বছর ধরেই তা চলছে। কিন্তু, ইদানীং তা আরও বেড়েছে। একটা সময় ছিল, যখন ভাঙড়ে কার্যত আরাবুলই ছিলেন শেষ কথা! কিন্তু, এখন সময় বদলেছে। এখন শওকতের 'ওজন' আরাবুলের থেকে বেশি। অন্যদিকে, আরাবুল ইসলাম তুলনায় অনেকটাই কোণঠাসা।
এই প্রেক্ষাপটে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বারবার সংঘাত চলছেই। এমনকী, শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে একসঙ্গে চলার বার্তা দেওয়ার পরও পরিস্থিতি খুব একটা যে বদলায়নি বুধবারের ঘটনাই তার প্রমাণ।