আসানসোল সংশোধনাগারে চিকিৎসকের পদ ফাঁকা। সেখানে চিকিৎসক প্রয়োজন বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ করা হয়েছিল লোভনীয় বেতন–সহ সুযোগ–সুবিধার কথা। কিন্তু সংবাদপত্রে দেওয়া বিজ্ঞাপনে সাড়া মেলেনি। তখন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর, জেলা হাসপাতাল, রেডক্রসের অফিস–সহ নানা জায়গায় চিকিৎসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেয়। তাতে কয়েকজন আগ্রহ দেখালেও কাজের বিবরণ শুনে আর যোগাযোগ করেননি।
কেমন সেই লোভনীয় প্রস্তাব? সংশোধনাগার সূত্রে খবর, একাধিক সুযোগ সুবিধা দেওযার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। তার সঙ্গে প্রায় ৫২ হাজার টাকার মাসিক ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। অথচ ডিউটি মাত্র কয়েক ঘণ্টার। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্রে এই লোভনীয় কাজের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিন্দুমাত্র সাড়া মেলেনি। চাকরিটি আসানসোল সংশোধনাগারের চিকিৎসকের পদে। এখানেই বন্দি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল, সায়গল হোসেন–সহ অন্যান্যরা।
ঠিক কী অবস্থা আসানসোল সংশোধনারে? এখানে অনেকদিন ধরেই চিকিৎসক নেই। কোনও বিচারাধীন বা সাজাপ্রাপ্ত বন্দি অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা করতে হবে। বাড়তি জটিলতা হলে আসানসোল জেলা হাসপাতালে রেফার করে দিলেই দায়িত্ব শেষ। কিন্তু এই কাজে সাহস পাচ্ছেন না চিকিৎসকরা। এখানে চিকিৎসক হিসাবে ২৮ সেপ্টেম্বর আবেদনের শেষ তারিখ। ২৯ তারিখ বোর্ড মিটিং এবং চিকিৎসক নিয়োগ শেষ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল রাজ্যের কারা দফতর। কিন্তু চিকিৎসক মেলেনি আসানসোলের জেলা সংশোধনাগারে। ফলে চিকিৎসায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
ঠিক কী বলছেন জেল সুপার? আসানসোল জেলা সংশোধনাগারের সুপারিনটেনডেন্ট কৃপাময় নন্দী বলেন, ‘উচ্চ ভাতার চাকরি হলেও চিকিৎসকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এখনও কোনও আবেদনই জমা পড়েনি। তাই আমরা উৎকণ্ঠায় রয়েছি। কারণ বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসা সংশোধনাগারে করা বিশেষ প্রয়োজন। আমরা বিভিন্ন দফতরে এই বিজ্ঞাপনের পোস্টারও পাঠিয়েছি। তাতেও কাজের কাজ হচ্ছে না।’ কেন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না চিকিৎসকরা? সূত্রের খবর, আসানসোল জেলা সংশোধনাগার এখন ভিআইপি সংশোধনাগার। এখানে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে রয়েছেন দাপুটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডল। আছেন তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। হালিশহরের পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি। ইসিএলের চার প্রাক্তন এবং বর্তমান জিএম–সহ আর্ট শীর্ষ আধিকারিক। তাছাড়া আছে কুখ্যাত অপরাধীরা। এই ভিআইপি বন্দিদের চিকিৎসা করতে ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ তাঁদের রিপোর্টের উপর যদি সিবিআই হস্তক্ষেপ করে।