প্রথম বর্ষের ট্রেনি হয়েও 'বিশেষজ্ঞ' ডাক্তার লিখে বেসরকারি জায়গায় চিকিৎসা করেছেন আসফাকুল্লা নাইয়া? সেই বিতর্কের মধ্যেই মুখ খুললেন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ আসফাকুল্লা নাইয়া। তিনি দাবি করেছেন, নিয়মের বাইরে গিয়ে ভালো কাজ আর অপরাধের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। নিয়মের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়ে ভালো কাজ করা মোটেও অপরাধ নয় বলে দাবি করেন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন যে বিনামূল্যেই বেসরকারি জায়গায় চিকিৎসা করতেন। এমনকী তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি একটাও টাকা নিতেন, তাহলে ডাক্তারি ছেড়ে দেবেন।
প্রথম বর্ষের ট্রেনি হয়েও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লিখে চিকিৎসা?
আর তিনি সেই মন্তব্য করেছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের 'বিরোধী' সংগঠন জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগের পরে। ওই সংগঠনের শ্রীশ চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, হুগলির সিঙ্গুরের একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্র্যাকটিস করতেন আসফাকুল্লা। চিকিৎসকদের যে তালিকা ছিল, তাতে তাঁর নামের পাশে 'নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ' লেখা ছিল। অথচ ২০২২ সালেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের ট্রেনি হিসেবে আসফাকুল্লা যোগ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন শ্রীশ।
ডিগ্রি জালিয়াতির সামিল, অভিযোগ করা হয়েছে
জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের প্রশ্ন, প্রথম বর্ষের ট্রেনি হয়ে কীভাবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে চিকিৎসা করতে পারেন আসফাকুল্লা? পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে সেটা মোটেও করা যায় না। কিন্তু সেটাই করেছেন আসফাকুল্লা। যা ডিগ্রি জালিয়াতির সামিল। সেই পরিস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’-র বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছেন জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।
‘রোগী দেখে-দেখে শেখা হয়’, বললেন আসফাকুল্লা
আর সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফেসবুকে মুখ খুলেছেন আসফাকুল্লা। তিনি বলেছেন, ‘ফ্রি’তে চিকিৎসা করেছি বলে সেটার প্রচার করছি না। আমার নামে মিথ্যাচার হয়েছে। তাই মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য এই পোস্ট করলাম।পিজিটি লাইফে সমস্ত পিজিটিরা, সিনিয়র রেসিডেন্ট লাইফে সিনিয়র রেসিডেন্টরা হাসপাতালে রাত-দিন এক করে হাজার-হাজার রোগী দেখেন।রোগী দেখে-দেখে শেখা হয়।'
'নিয়মের বাইরে গিয়ে ভালো কাজ অপরাধ নয়'
সেইসঙ্গে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেই আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ বলেন, 'এর বাইরে যে কেউ যদি রোগী দেখেনও, সেটা অন্যায় বলে মনে করি না। এই জন্য যে সে রোগীই তো দেখছে রে বাবা। এমন একটা ভাবধারা সমাজে তৈরি কেন করছি যে ডাক্তার রোগী দেখবে সেটাও খারাপভাবে সমালোচিত হবে? নিয়মের বাইরে কিছু ভালো কাজ করা আর অপরাধ করা এক নয় - এই পার্থক্যটা বুঝতে হবে। রোগী দেখা, রোগীর কষ্ট দূর করা সবসময় পুণ্যের কাজ যদি সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেটা টাকা নিয়ে কিংবা টাকা না নিয়ে।'