কামারহাটি পুরসভার একাংশে ‘ডায়েরিয়ার’ প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে দু'জনের। কয়েকজন শিশু-সহ আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ জন। যদিও কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের দাবি, ডায়েরিয়া হয়েছে বলে শোনা গিয়েছে। এখনও মৃত্যুর কোনও খবর মেলেনি। তবে প্রয়োজনে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মদন।
সোমবার থেকেই কামারহাটি পুরসভার এক থেকে পাঁচ নম্বর নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা ডায়েরিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। পুরসভার একাংশের দাবি, প্রায় ৬৮ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কামারহাটি পুরসভার মুখ্য প্রশাসক গোপাল সাহা। তিনি জানান, গতরাত থেকেই কয়েকটি পাড়ার মানুষের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাঁদের বমি হচ্ছে। কয়েকজনকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। দুই মহিলা হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। কয়েকজনের অবস্থা একটু গুরুতর।
তবে কোথা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুরসভার মুখ্য প্রশাসক জানিয়েছেন, কামারহাটিতে কলকাতা পুরনিগম এবং কামারহাটি জুট মিল থেকে জল সরবরাহ করা হয়। কোথা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা নিশ্চিত নয়। কলকাতা পুরনিগমের জলের থেকে সংক্রমণ ছড়ালে সর্বত্র সমস্যা হত। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই পাঁচ ওয়ার্ডে পুরসভার সরবরাহ করা জল ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। জল ফুটিয়ে খাবার জন্য পুরসভার তরফ থেকে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি হ্যালোজেন ট্যাবলেট দিয়ে আসছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। ‘ডায়েরিয়ায়’ আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে বিশেষ কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। পাশাপাশি জলের নমুনা সংগ্রহণ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুর প্রশাসক।
তবে পুর প্রশাসকের দাবি মানতে রাজি নন কামারহাটির বিধায়ক। মদন বলেন, 'ডায়েরিয়া হয়েছে বলে শোনা গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বলে এখনও নিশ্চিত কোনও তথ্য আসেনি।' সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আমি শুনেছি আমাদের চেয়ারম্যান বলেছেন যে জল থেকে হয়েছে এটা। আমি আমার চেয়ারম্যানকে (পুর প্রশাসক) দোষ দেব না। কারণ ও তো বিশেষজ্ঞ নন। আবেগের বশে হয়ত বলে ফেলেছেন। এটা আমার খুব গর্ব যে চেয়ারম্যান নিজের ঘাড়ে নিজে দোষ চাপিয়েছেন যে নিজের জল থেকে এটা (ডায়েরিয়া) হয়েছে। এটা আমি এটা মানতে রাজি নই। আমার নাতিরও ডিহাইড্রেশন হয়েছে। আমার নাতিরও সমস্যা হচ্ছে। বমি হচ্ছে। সে একটা সেভেন স্টারের (রেস্তোরাঁ) মাটন বিরিয়ানি খেয়েছে। কোথা থেকে কী হয়েছে, সেটা না জানলে বলা তো খুব মুশকিল।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে প্রতিদিন এক লাখ মানুষকে খাবার দেওয়া হবে। টালা থেকে জল এনে ফুটিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মদন।