রামকৃষ্ণ মিশনের জলপাইগুড়ি শাখায় হামলা। গোটা বাংলায় শোরগোল। এতদিন জমি দখলের নানা অভিযোগ শোনা যেত। কিন্তু তা বলে এবার রামকৃষ্ণ মিশনের জমির উপরেও নজর? এটা কোন বাংলা? শিউরে উঠছেন অনেকেই। কিন্তু ঠিক কী হয়েছিল সেদিন?
জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি মহারাজ স্বামী শিবপ্রেমানন্দ থানায় যে অভিযোগ করেছেন সেখানে তিনি বিস্তারিকতভবে জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, দুষ্কৃতীদের হাতে রড, কাটারি, বন্দুক ছিল। আশ্রমের দুই নিরাপত্তারক্ষীকে তারা বন্দি করে।এরপর দোতলায় উঠে ৫জন কর্মীকে আটক করে। পরে ওই সাতজনকে এনজেপি স্টেশন সহ অন্যত্র ছেড়ে দেয়। কিন্তু কেন তারা সেবক হাউজে এভাবে ঢুকল রাতের অন্ধকারে?
অভিযোগে এক ব্যক্তির নামও উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকী এরপর আরও বড় হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার রাতে সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই ভয়াবহ রাতের অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন মহারাজ।
এদিকে শিলিগুড়ির শালুগাড়ার কাছে সেভক রোডে যে সম্পত্তি সরকারি খাতায় মিশনের নামে রয়েছে সেখানে কেন এভাবে হামলা? ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় এনিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। কেন জমি মাফিয়ারা এভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তাদের পেছনে কোন প্রভাবশালী রয়েছে তা নিয়ে নানা চর্চা চলছে। তাছাড়া শাসকদলের হাত না থাকলে এভাবে হামলা চালানো আদৌ সম্ভব কি না সেই প্রশ্ন উঠছে।
মহারাজ বলেন, সেবক হাউজ বলে একটা সম্পত্তি আছে। সুনীল কুমার রায় রেজিস্টার্ড ট্রাস্ট ডিডের মাধ্যমে এটা আমাদের দিয়েছিলেন। আইনগতভাবে আমরা অধিকার নিয়েছিলাম। আমরা নানা সময় নানা সেবামূলক কাজ করি। হঠাৎ ১৮ই মে রাত সাড়ে তিনটের সময় অনেক লোক এল। ওদের হাতে কাটারি, বন্দুক, রড ছিল। হেলমেট পরে ছিল। গ্লাস দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। বাংলায় কথা বলছিল। পাঁচিল টপকে ওরা ঢোকে। দুজন নিরাপত্তারক্ষীর মধ্যে একজন গানম্যান ছিল। ওদের হাত বেঁধে দেয়। সিম নিয়ে মোবাইল ফেরত দেয়। আমাদের সম্পত্তি হল ১৯৭ কাটা। দোতলায় গিয়ে স্টাফদের উপর হামলা করে, হাত বেঁধে দেয়। সবাইকে ওরা ম্যাজিক গাড়িতে নিয়ে গিয়ে এনজেপির কাছে ছে়ডে দেয় ৫জনকে। বাকি দুজনকে অন্যত্র ছেড়ে দেয়। ভক্তিনগর থানায় এফআইআর করি। ৩০-৩৫জন এসেছিল। ওপরে ১০-১৫জন ছিল।
একেবারে ভয়াবহ পরিস্থিতি। সেই রাতের পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেছেন মহারাজ। তবে এর বাইরে কোনও কথা বলতে চাননি মহারাজ।