বহরমপুরে কলেজছাত্রী সুতপা চৌধুরী যে সম্পর্কের টানাপোড়েনেই খুন হয়েছেন তা স্পষ্ট হয়েছিল আগেই। তবে সম্পর্কের জটিলতা যে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল তা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। বুধবার সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী দাবি করেছেন, বেশ কয়েকবছপ ধরে সুতপাকে উত্যক্ত করছিল সুশান্ত। যার জেরে মালদা থেকে মেয়েকে বহরমপুরে কলেজে ভর্তি করেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। স্বাধীনবাবুর দাবি, ছেলেটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুলিশকে জানাইনি। তাতেই আমার চরম ক্ষতি হয়ে গেল।
সুতপার বাবার কথায়, গত কয়েক বছর ধরে সুতপাকে উত্যক্ত করছিল সুশান্ত। মেয়েকে ওর থেকে দূরে রাখতে বহরমপুরে কলেজে ভর্তি করেন তিনি। তার পরও ওর পিছু ছাড়েনি যুবক। গত কয়েকমাস ধরে ফের উত্যক্ত করা শুরু করে সুতপাকে। যার জেরে সুশান্তকে ফোনে ব্লক করে দেন সুতপা। ৫ বার সিম বদলান তিনি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। প্রতিবারই নম্বর জোগাড় করে সুতপাকে ফোন করত সে।
স্বাধীনবাবু জানিয়েছেন, সুতপার এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলে সুশান্ত। তাঁর কাছ থেকেই মেয়ের ফোন নম্বরসহ সমস্ত তথ্য জোগাড় করত ঘাতক। এমনকী সুশান্তর উৎপাতে সুতপা মালদহে এলে একা তাঁকে বাড়ির বাইরে ছাড়া হত না।
ফেসবুকে সুতপাকে প্রাণে মারার স্পষ্ট হুমকি দিয়েছে সুশান্ত। তার একাধিক পোস্টেও জিঘাংসা স্পষ্ট। তাহলে কেন পুলিশে অভিযোগ জানাননি তিনি। স্বাধীনবাবু জানিয়েছেন, এসব নিয়ে থানা পুলিশ করে একটা ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাইনি। বুঝিয়ে বলেছিলাম যেন আগে নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করে। কিন্তু ও যে আমার এত বড় ক্ষতি করে দেবে বুঝতে পারিনি।
ঘটনার পর থেকে মালদার বৈষ্ণবনগরে সুতপাদের গ্রামের বাড়িতে কান্নার রোল থামছে না। বড় মেয়ের পরিণতিতে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন বাবা। কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা। গ্রামের মেয়ের এই পরিণতির জন্য সুশান্তর ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী।