কোনও পোস্টারে লেখা— ‘হিন্দুরা চার্চে গিয়ে স্বধর্মের অবমাননা করবেন না।’ আবার কোনওটায় বার্তা— ‘হিন্দুদের ধর্মপালন চার্চে নয়, মন্দিরে। স্বধর্ম পালন করুন।’ বড়দিনের আগে কৃষ্ণনগর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এমনই সব বিতর্কিত পোস্টার। কৃষ্ণনগর জেলা প্রশাসনিক ভবন–সহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় পাঁচিলে লাগানো এ সব পোস্টারে খ্রিস্টানদের উৎসবে শামিল না হওয়ার ফতোয়া জারি করেছে রজরং দল। পোস্টারে রয়েছে রজরং দলের নামও। আর এ ঘটনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন কৃষ্ণনগরবাসী।
পাশাপাশি কিছু পোস্টারে ২৫ ডিসেম্বরকে তুলসী পূজন দিবস হিসেবে পালন করার কথাও বলা হয়েছে বজরং দলের পক্ষ থেকে। এ উপলক্ষে আজ কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে এক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল। আর বড়দিনের আগে ধর্মাচরণ নিয়ে এমন পোস্টার ছড়িয়ে পড়তে সোশ্যাল মিডিয়াতেও কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হয়েছে। আর তার জেরেই পিছু হঠে আপাতত এসব পোস্টার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
নদিয়ার রানাঘাট, তাহেরপুর, কৃষ্ণনগরের মতো এলাকায় খ্রিস্টার ধর্মালম্বী মানুষের বাস। কৃষ্ণনগরের গির্জার খ্যাতি জগৎজোড়ো। বড়দিন উপলক্ষে এ সব এলাকায় বিশেষ উৎসব পালিত হয় যাতে সামিল হন হিন্দু, মুসলিম–সহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ। বছরের পর বছর এমনই দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত এখানকার বাসিন্দারা। আর তার মধ্যে এমন ফতোয়া জারি করে পোস্টার দেখে স্বাভাবিকভাবেই নিন্দা জানিয়েছেন তাঁরা। অনেকের মতে, এর নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক অভিসন্ধি।
পোস্টার নিয়ে কিছু না বললেও তুলসী পূজন নিয়ে স্থানীয় বজরং দল নেতৃত্বের দাবি, হিন্দুদের কাছে তুলসী পূজনের আবেদন করাই যায়। বরাবরই ২৫ ডিসেম্বর এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। এদিকে, বিজেপি–র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ সব পোস্টারের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই। তাঁরা আবার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, এলাকায় সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছে বজরং দল, বিজেপি–রা।