বালোচিস্তানের স্বাধীনতাকামী বিএলএ সশস্ত্র বাহিনী দু'দিন আগেই পাকিস্তানে আস্ত একটি ট্রেন হাইজ্যাক করেছিল। গত রাতে বালোচদের সেই অপহরণের অভিযান শেষ করে পাক সেনা। প্রায় দেড়দিন ধরে চলেছে এই অপহরণের অভিযান। যা নিয়ে তোলপাড় গোটা বিশ্ব। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লাখ লাখ মানুষ মোবাইল বা টিভির পর্দায় চোখ রাখছেন এই সংক্রান্ত আপডেট পাওয়ার জন্যে। সেই সব উৎসুক মানুষের মধ্যে আছেন বাংলারও বহু মানুষ। অবশ্য অনেক বাঙালিরই হয়ত বালোচ কাণ্ডে মনে পড়ে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ১৫ বছর আগের বাঁশতলা। বালোচরা যেমন ট্রেন হাইজ্যাক করেছিল, তেমনই ট্রেন অপরহণ করা হয়েছিল এই বাংলার মাটিতে। বালোচ বিপ্লবীরা যেমন রাজনৈতিক বন্দিদের দাবি করেছে, সেবার বাংলার ট্রেন অপহরণকারীরা দাবি জানিয়েছিলেন ছত্রধর মাহাতোর মুক্তির। (আরও পড়ুন: ভুয়ো ইন্টেলে সেনাকে বোকা বানায় বালোচরা, ব্যর্থ হয়ে এখন ন্যাকা কান্না পাকিস্তানের)
আরও পড়ুন: 'ছিঃ ছিঃ ছিঃ রে ব্যানার্জি...', ভাইরাল ওড়িয়া গানের প্যারোডি মমতাকে নিয়ে
২৭ অক্টোবর, ২০০৯। বালোচ কাণ্ডের ৫৬১৪ দিন আগে। ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা স্টেশনে ছত্রধর মাহাতোর মুক্তির দাবিতে ভুবনেশ্বর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস আটকে দেওয়া হয়েছিল। ছত্রধর মাহাতোর সংগঠন জনসাধারণের কমিটির প্রায় ৫০০ জন সদস্য সেই ট্রেনটি আটকে অপহরণকাণ্ড ঘটিয়েছিল বলে অভিযোগ। রাজধানী এক্সপ্রেসের দুই চালককে অপহরণ করা হয়েছিল। ঘটনার নেপথ্যে মাওবাদীদের হাত ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়। (আরও পড়ুন: 'পঞ্চায়েতে ২ জেলায় ১.৫ লাখ ভোট', বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার সব আসনে লড়বে AIMIM)
বালোচিস্তানের জাফর এক্সপ্রেসে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। আর বাঁশতলায় আটকে পড়া সেই রাজধানী এক্সপ্রেসে যাত্রী সংখ্যা ছিল ১২০০। প্রায় ৭ ঘণ্টা এই ১২০০ যাত্রীকে আটক করে রেখেছিলেন মাওবাদীরা। আর তারপরে নির্ধারিত সূচির থেকে ৯ ঘণ্টা দেরিতে রাজধানী এক্সপ্রেসটি পৌঁছেছিল গন্তব্যে। দাবি করা হয়েছিল, জনসাধারণের কমিটির সদস্যরা ট্রেনে উঠে পড়ে কামরা বন্ধ করে দিয়েছিল। রাজধানী এক্সপ্রেসের কাচের জানলা ভাঙতে শুরু করেছিল অপহরণকারীরা। আজকের বালোচ আর্মির মতো বাঁশতলার অপহরণকারীদের হাতে ছিল না বন্দুক বা বোমা। তাদের হাতে নাকি ছিল তির ধনুক, ছুরি। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সেনাপ্রধানকে সরানোর ষড়যন্ত্র ঢাকায়, নজরদারি ISI ঘনিষ্ঠ ফয়জুরের ওপর)
অনেক প্রত্যক্ষদর্শীরাই দাবি করেছিলেন, অপহরণকারীরা যাত্রীদের অভয় দিয়ে জানিয়েছিলেন, তারা কাউকে আঘাত করতে চায় না। তাদের নেতাকে ছাড়াতেই তারা এই কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এমনকী অপহরণকারীরা দাবি করেছিল, যাত্রীদের ট্রেনের থেকে বের করে দিয়ে তারা ট্রেনটিকে জ্বালিয়ে দিতে চায়। পরে অবশ্য ট্রেন জ্বালানো হয়নি। দীর্ঘ ৬-৭ ঘণ্টা পরে সেখানে পৌঁছেছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। পরে সেই ট্রেনটি ২৮ অক্টোবর দিল্লি পৌঁছেছিলেন। তবে বাঁশতলায় না হলেও বালোচিস্তানের ঘটনায় রক্ত ঝরেছে। বাংলায় রেল অপহরণের ঘটনা ৭ ঘণ্টার ছিল, পাকিস্তানে সেটির মেয়াদ ছিল ৩০ ঘণ্টারও বেশি।