দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে ৪ আদিবাসী মহিলাকে বিজেপিতে যোগদানের প্রায়শ্চিত্ত হিসাবে দণ্ডি কাটানোর ঘটনায় চাপের মুখে ২ তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই নিয়ে বুধবারই রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল জাতীয় উপজাতি কমিশন। তার পর কার্যত বাধ্য হয়ে ২ তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম আনন্দ রায় ও বিশ্বনাথ দাস। এর মধ্যে বিশ্বনাথবাবু অভিযুক্ত নেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর সর্বক্ষণের সঙ্গী। আনন্দ রায় বালুরঘাট যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। তাদের বিরুদ্ধে তপশিলি জাতি ও উপজাতি নিপীড়ন নিরোধী আইনের ৫০৫ ও ৫০৯ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার তপনে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন কয়েকশো মানুষ। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। শুক্রবার তাদের তিন জন আদিবাসী মহিলাকে বালুরঘাট শহরের রাস্তা দিয়ে দণ্ডি কাটতে কাটতে তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকতে দেখা যায়। এর পর তারা তৃণমূলে যোগদান করেছেন বলে দাবি করে দলীয় নেতৃত্ব। ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতে রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় বিজেপিসহ বিরোধীরা। ঘটনায় হস্তক্ষেপ দাবি করে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লেখেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি কর্মীরা।
এই ঘটনায় সাফাই দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী বলেন, ওই মহিলারা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে প্রায়শ্চিত্ত করতে দণ্ডি কাটতে কাটতে তৃণমূলে ফিরেছেন তাঁরা। প্রদীপ্তার পাশে দাঁড়িয়ে এক মহিলা সেকথা স্বীকারও করে। তাতে বিতর্ক থামেনি।
বুধবার নিপীড়নের শিকার এক মহিলার স্বামী দাবি করেন, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগদান রুখতে দৃষ্টান্তমূলক কোনও সাজা দেওয়ার চাপ দলীয় নেতৃত্বের ওপর ছিল। সেই চাপেই দণ্ডি কাটানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। বুধবারই রাজ্যকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় জাতীয় উপজাতি কমিশন। তার পর দিনই গ্রেফতার করা হল ২ তৃণমূল নেতাকে। ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বালুরঘাট আদালতের বিচারক।