কোটা বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। আজ, শনিবার থেকে ওপার বাংলায় কার্যকর হয়েছে কার্ফু। যার জেরে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেল সীমান্ত বাণিজ্য। উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙা, পেট্রাপোল সীমান্তে শনিবার সকালবেলায় সামান্য আমদানি রফতানি হলেও দুপুর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। তার জেরে পণ্যবোঝাই ট্রাকের পর ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়ে সীমান্তে। আনাজ ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পচে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বিপুল লোকসান হবে বলে আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। সমস্যায় পড়েছেন যাঁরা মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায়ী এবং পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা। আবার ফিরতে না পেরে চিন্তিত বাংলাদেশের বাসিন্দারাও।
এদিকে আজ সকালে ৩৫টি ট্রাক রফতানি হবার পরেই বন্ধ হল এই বাণিজ্য প্রক্রিয়া। আমদানি চলে অত্যন্ত ধীর গতিতে। পেট্রাপোল দিয়ে ভারতে আসা যাত্রী সংখ্যা অনেক কমেছে। পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া যাত্রীরা দেশের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত। আজ পেট্রাপোলে প্রভাব পড়েছে মুদ্রা বিনিময়, যাত্রী পরিষেবায়। সবচেয়ে ধাক্কা খেতে চলেছে সীমান্ত বাণিজ্য। বাংলাদেশের যাত্রী প্রবেশ একেবারেই বন্ধ। বাংলাদেশে কার্ফুর সঙ্গে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও। ফলে সীমান্তে পণ্যবোঝাই ট্রাক পৌঁছে গেলেও ওপার বাংলা থেকে অনলাইনে চালান মিলছে না। সড়কপথে সীমান্ত পারাপারও এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘এটা বাংলা এবং দেশের অস্তিত্ব রক্ষার সভা’, প্রস্তুতি দেখে ধর্মতলায় বার্তা দিলেন মমতা
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে আসা এক ভারতীয় নাগরিকের দাবি, ঢাকা থেকে যানবাহন না থাকার জেরে অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে পেট্রাপোলে। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, সকালে রফতানি শুরু হবার পরে ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির সঙ্গে কথা বলে রফতানি বন্ধ করা হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে ততক্ষণ রফতানি বন্ধ থাকবে। কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পড়শি দেশে অশান্তির বাতাবরণ। তাই দু’দেশের পর্যটকরা পড়েছেন সমস্যায়। বাড়ি ফেরা নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ। রবিবার সীমান্তে বিটিং রিট্রিট বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীর অভাবে বন্ধ রয়েছে একাধিক বাস পরিষেবা।
এছাড়া বন্ধন, মৈত্রী এবং মিতালি এক্সপ্রেস বন্ধ করা হয়েছে। আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মিতালি এক্সপ্রেস। সপ্তাহে তিনদিন ভারত–বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করত এই ট্রেন। কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলবে না। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আবার ট্রেন চালু হবে।’ বাপন দাস নামে এক যাত্রীর কথায়, ‘আন্দোলনের জেরে চোখের সামনে গুলি চলতে দেখেছি। বহুতলেও আগুন জ্বলতে দেখেছি।’ নদিয়ার গেদে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফেরেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। জলপাইগুড়ির ফুলবাড়িতে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে চলছে যাতায়াত।