চিকেনস নেক পথে বহুদিন ধরেই নজর রেখেছে চিন। বাংলাদেশে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হওয়ায় এখন ওই এলাকায় গোলমাল পাকিয়ে উত্তর–পূর্বের সাত রাজ্যকে অশান্ত করার ছক কষেছিল ধৃত আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিরা। এমনকী উদ্দেশ্য ছিল এই সাত রাজ্যের বাইরে বাংলা এবং প্রতিবেশী রাজ্যগুলিকে অশান্ত করে তোলার। তবে তার জন্য নির্দিষ্ট অ্যাসাইনমেন্ট ছিল জঙ্গিদের কাছে। বাংলাকে সেফ করিডর রেখে যে ছক কষা হয়েছিল সেটা বদলে যায় অ্যাসাইনমেন্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে। আর সেটাই ধৃত জঙ্গিদের থেকে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের বেশ কিছু ধর্মীয় নেতা ও প্রভাবশালীদের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। ওটাকে বলা হয় খতম–তালিকা। এই খতম–তালিকায় থাকা কয়েকটি নাম দেখে আত্মারাম খাঁচা হয়ে যায় এসটিএফ কর্তাদের। খুন করার পাশাপাশি এলাকা অশান্ত করা এবং জাতি দাঙ্গা লাগানোর নীল নকশাও তৈরি করে ফেলেছিল জঙ্গিরা। বাংলাদেশে এখন ইউনুস সরকারের জমানায় জেলে থাকা জঙ্গিরা মুক্তি পেয়ে গিয়েছে। আর তারপরই ভারতকে টার্গেট করেছে। বাংলা–সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিকে অশান্ত করাই বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মূল উদ্দেশ্য। ধৃত জঙ্গিরা বিশেষ ফোন অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত। তাতে পাকিস্তানের কিছু জঙ্গির যোগও ছিল।
আরও পড়ুন: সিপিএমের অন্দরে গৃহযুদ্ধ চরমে পৌঁছল, জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ ১৮ জন কমরেডের
অসম পুলিশের এসটিএফের রিপোর্ট হাতে আসার পর সবটাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এই এসটিএফের কাছে। ওই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, ধৃত নুর ইসলাম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা গত দু’মাসে ফরাক্কা, ধুলিয়ান, ভগবানগোলায় একের পর এক গোপন বৈঠক করেছিল। সেখানে একটি ধর্মীয় সংগঠন–সহ বেশ কিছু হিন্দু নেতাকে খতম করার স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়। যা কার্যকর করতেই বেশ কয়েকজনকে আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করার ভার দেওয়া হয়। সীমান্তবর্তী এলাকায় টেনশন তৈরি করে লাভ তুলতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। তাই বাংলাদেশ থেকে আরও জঙ্গিদের এপার বাংলায় নিয়ে আসার ছক কষে ওপার বাংলার কিছু সংগঠন। তাদের আড়ালে রাজনৈতিক দলও থাকতে পারে। আনসারুল্লা বাংলা টিমের মাধ্যমে সেই কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। জঙ্গিদের কাছ থেকে যে সব নথি মিলেছে তাতে স্পষ্ট, ভারত সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদকে তারা নিজেদের যুদ্ধ বলেই মনে করেছে।
এছাড়া গত দু’বছরে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ ও প্রতিবেশী রাজ্যের পুলিশের হাতে ‘আল কায়দার ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট’ এবং আনসারুল্লা বাংলা টিমের বেশ কিছু জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ২০। তাতে জঙ্গিদের ওই মডিউল ধাক্কা খায়। এসটিএফ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি মণিরুল শেখ সম্প্রতি একটা ছোট মাদ্রাসা চালু করেছিল। যেখানে পড়ুয়া ছিল ১২ জন খুদে। আর মণিরুলের উদ্দেশ্য ছিল, এলাকার সমমনস্কদের সংগঠনে নিয়ে এসে মগজধোলাই করার। এখন এই ধৃতদের সহযোগী কারা সেটার খোঁজে রয়েছেন গোয়েন্দারা।