বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে একাধিক ট্রেন এখন আর সেভাবে যাতায়াত করে না। মিতালি এক্সপ্রেস, বন্ধন এক্সপ্রেস, মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাতায়াত কমে গিয়েছে। তার ফলে ওপার বাংলা থেকে মানুষ এপার বাংলায় বৈধ পথে আসতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আর তাই অবৈধ পথে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে এপার বাংলায় ঢুকে পড়ছেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে এই সমস্যা এখন দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকজন জঙ্গিও ধরা পড়েছে। প্রত্যেক বছর উরস উৎসবে দুই বাংলার এক হয়ে যায় মেদিনীপুর জেলায়। বাংলাদেশ থেকে উরস উৎসব উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রেন আসে। এবার কিন্তু সেই ট্রেন আসছে না। ১২৩ বছরের মাথায় এই নিয়ে পঞ্চমবার তাল কাটল।
এই বিষয়ে ‘অঞ্জুমান–ই–কাদেরিয়া’র সভাপতি ঢাকার মহম্মদ মেহবুব উল আলম জানান, এবার চাপ আছে। তাই এবার ‘উরস স্পেশাল ট্রেন’ যাচ্ছে না। ফলে তাঁদেরও যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের রাজবাড়ি থেকে মেদিনীপুরে এই বিশেষ ট্রেন রোজ আসে। এই বিষয়ে মহম্মদ মেহবুব উল আলম বলেন, ‘প্রাথমিক প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু এবার মেদিনীপুরে উরস উৎসবে যাওয়া হচ্ছে না। আগামী বছর সব ঠিক থাকলে আবার যাব।’ শুধু তাই নয়, এবার ভাষা দিবসেও দুই বাংলা এক হতে পারবে না বলে মনে করা হচ্ছে। বেনেপোল এবং পেট্রাপোল এক হবে না বলেই সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে এপার বাংলার বিশিষ্টজনেরা পেট্রাপোলের বিশেষ জায়গায় ভাষা শহিদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
আরও পড়ুন: হুগলি নদীতে ডুবল ছাই বোঝাই বাংলাদেশি বার্জ, উদ্ধার ১৬ জন নাবিক, সাগরে অঘটন
বাংলাদেশ থেকে মিঁয়াবাজারে জোড়া মসজিদে সুফি সাধকের মৃত্যুবার্ষিকীতে আসেন। হজরত মহম্মদের ৩৩তম বংশধরের মাজার আছে এখানে। ১৯০২ সাল থেকে এই ট্রেন আসছে। এবার তা আসবে না। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার মারাত্মক বেড়েছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ভারত সরকারও কড়া বার্তা আগে দিয়েছে বাংলাদেশকে। এই আবহে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি উরস উৎসবে মেলা বসলেও ‘উরস স্পেশাল ট্রেন’ আসবে না। অতীতে ১৯৬৫, ১৯৭১, ২০২১, ২০২২ সালেও ট্রেন আসেনি। তবে ২০২১ এবং ২০২২ সালে ট্রেন আসেনি মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য।
আর ১৭ ফেব্রুয়ারি তারিখেই যদি উরস উৎসবে আসা না যায় তাহলে ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে দুই বাংলা এক হবে কি করে! উরস উৎসবে বিশেষ ট্রেন দেওয়া হয় কারণ বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশের তীর্থযাত্রীরা এখানে আসেন। আর তাঁদের সঙ্গে থাকে বহু জিনিস এবং অ্যালুমিনিয়ামের বাসনপত্র, মাদুর, ক্ষীরের গজা, মিহিদানা ইত্যাদি। যদিও এপারে মেদিনীপুরে উরস উৎসব হবে। মেলাও বসবে। ট্রেন আসুক বা না আসুক। এই নিয়ে মেদিনীপুরের পুরপ্রধান সৌমেন খানের বক্তব্য, ‘ওপারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। তাই বাংলাদেশ থেকে ট্রেন আসছে না। তবে এপারের হাজার হাজার পুণ্যার্থী আসবেন। তার জন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছি।’