হুগলি নদীতে ঘোড়ামারা দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশি ছাই বোঝাই বার্জ ডুবে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। এই পরিস্থিতিতে বার্জ থেকে চিৎকার শুনে ১৬ জন বার্জের কর্মীকে উদ্ধার করে গঙ্গাসাগর থানার পুলিশ। বজবজ থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছিল বার্জ বা পণ্যবাহী জাহাজটি। জলপথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ। একেবারে সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপের কাছে মুড়িগঙ্গা নদীর চড়ায় ধাক্কা দেয় বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ‘সি ওয়ার্ল্ড’। ডুবন্ত বার্জ থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্ধার করেন ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। তাঁদের তৎপরতায় প্রাণ ফিরে পেলেন সকলেই।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত বহু জাহাজ হলদিয়া থেকে যাতায়াত করে থাকে। আর ঘোড়ামারা দ্বীপ সংলগ্ন নদী থেকে হঠাৎ আজ ভোররাতে জাহাজের কর্মীদের চিৎকার শুনতে পাওয়া যায়। তখন পাশে থাকা ভারতীয় জেলেদের একটি নৌকা কাছাকাছি গিয়ে বুঝতে পারে যে, বার্জটি ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। আর মৎস্যজীবীরা এই ঘটনা দেখে গঙ্গাসাগর থানায় ফোন করেন। এই ফোন পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে সাগর থানা থেকে অর্পণবাবুর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী লঞ্চ এবং স্পিডবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে ১৬ জনকে উদ্ধার করেন। নিরাপদে উদ্ধার করার পর নিয়ম মেনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর থানার পুলিশ চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। এবার আইন মেনে তাঁদের হস্তান্তরিত করা হবে বাংলাদেশের হাতে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মাটিতে ব্রাত্য লালন সাঁই–সত্যেন বসু–প্রফুল্লচন্দ্র–জীবনানন্দ, তুঙ্গে বিতর্ক
অন্যদিকে জাহাজটি মুড়িগঙ্গা নদীর চরে ধাক্কা মারায় ডেক–সহ বডিতে মাঝখান থেকে বড় ফাটল ধরে। তারপর সেখান দিয়ে হু হু করে নদীর জল ঢুকতে শুরু করে। বিষয়টি বুঝেই জাহাজের নাবিকরা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুরু করে দেন। তখন নদীতে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা চিৎকার শুনে পণ্যবাহী জাহাজটির কাছে যান। তাঁরাই নাবিকদের কয়েকজনকে উদ্ধার করে সাগর থানায় খবর দেন। পরে ১৬ জন বাংলাদেশি নাবিককে উদ্ধার করে সাগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদেরকে রুদ্রনগর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। তবে বার্জটির সম্পূর্ণ সমুদ্রের মধ্যে ডুবে গিয়েছে। বার্জটির মধ্যে ছাই ভর্তি ছিল।
এছাড়া পাটাতন ফেটে বার্জে জল ঢুকেছিল বলেই এই বিপত্তি ঘটে। উদ্ধার হওয়া নাবিকরা জানান, পথ দেখানোর কথা ছিল যাঁর তিনি আগে চলে যাওয়ায় মাঝনদীতে বিপত্তি ঘটেছে। রাতে তাঁদের চিকিৎসার জন্য সাগর ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর পণ্যবাহী জাহাজের এক নাবিক বলেন, ‘এই নদীতে আমরা নতুন এসেছি। তাই এই পরিস্থিতি ঘটেছে। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা আমাদের উদ্ধার করেছেন। পুলিশও ভাল ব্যবহার করেছে। আবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত পণ্যবাহী জাহাজটিকে উদ্ধারের জন্য কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’