মহম্মদ ইউনুসের কেয়ারটেকার সরকারের জমানায় নাকি শিকেয় উঠেছে কাজকর্ম! তাই পেটের টানে ভারতে অনুপ্রবেশ করে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন এক বাংলাদেশি যুবক। তাঁর দাবি, একটি খালি লরিতে উঠে, লরিতে থাকা ত্রিপলের মধ্যে লুকিয়ে ভারতে ঢোকেন তিনি! কিন্তু, শেষ রক্ষা আর হল না। এদেশে কাজের সন্ধান পাওয়ার আগেই এপার বাংলার পুলিশ তাঁর সন্ধান পেয়ে গেল! পাশাপাশি, একই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের লরিচালক দুই ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় শনিবার সকালে - মালদার ইংরেজবাজার থানা এলাকায়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, শনিবার ইংরেজবাজার থানা এলাকার মহদিপুরের একটি আমবাগানে এক যুবককে ইতিউতি ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। তিনি যে স্থানীয় বাসিন্দা নন, সেটা বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাঁকে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
কিছুক্ষণ পুলিশের প্রশ্নের মুখেই ভেঙে পড়েন ওই যুবক। স্বীকার করেন, তিনি ভারতীয় নন, বাংলাদেশি! তাঁর নাম- ফজলুল হক এবং তাঁর বাড়ি পড়শি দেশের পার্বতীপুরের গঙ্গাসরা এলাকায়। কিন্তু, বর্তমানে সেদেশের যা হাল, তাতে কোথাও কোনও কাজ জুটছে না। তাই, কাজের সন্ধানে নেহাত বাধ্য হয়েই নাকি গোপনে ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এরই মধ্যে ফজলুল জানতে পারেন, ভারত থেকে আসা একটি পণ্যবাহী লরি খালি হয়ে ভারতে ফেরত যাচ্ছে। ফজলুলের দাবি, তিনি লুকিয়ে ওই লরিতে উঠে পড়েন এবং ত্রিপলের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখেন! ওই অবস্থাতেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের ঢোকেন তিনি। তারপর লরি থামলে এক ফাঁকে নেমে পড়েন। এরপরই নাকি এলাকার ওই আমবাগানে ঘোরাঘুরি করছিলেন তিনি।
ইংরেজবাজার থানার পুলিশ বাংলাদেশি ওই অনুপ্রবেশকারীর দাবি শোনার পর ঘটনার তদন্তে নামে এবং সংশ্লিষ্ট লরিটির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। তাতে আবার অন্য এক গন্ডগোল সামনে আসে।
জানা যায়, শুকরু আলি নামে এক যুবকের ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে নিয়ে তাঁরই ভাই রশিদুল গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। সম্ভবত, সেই লরিতে চড়েই ফজলুল ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। শুক্রবার ওই খালি লরি বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ফেরত আসে। আর ফজলুল পুলিশের হাতে ধরা পড়েন শনিবার সকালে।
এরপর শুকরু আলি ও তাঁর ভাই রশিদুলকেও গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। সূত্রের দাবি, তাঁদের কথায় নাকি একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। প্রসঙ্গত, এই দুই লরিচালক ভাই ইংরেজবাজারের কমলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, ফজলুল কখন কোন লরিতে চেপে বসেছিলেন বা ভারতের অনুপ্রবেশ করেছিলেন, তা তাঁদের জানা নেই!
এই প্রেক্ষাপটে পুলিশ ধৃত তিনজনেরই বয়ান খতিয়ে দেখছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।