বাংলাদেশে অশান্তি থামার কোনও নাম নেই। এখনও অব্যাহত হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন। তার সঙ্গে রয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকা মাড়িয়ে যাওয়ার মতো গর্হিত আচরণ!
এমনকী, গত কয়েক দিনে প্রথমে কলকাতা, তারপর একযোগে বাংলা, বিহার, ওডিশা দখল করে নেওয়ার হাস্যকর হুমকি দিয়েছে সেদেশের প্রাক্তন সেনা আধিকারিক এবং বিএনপি নেতারা!
আরও এক কট্টরপন্থীকে বলতে শোনা গিয়েছে, তারা নাকি উত্তর-পূর্ব ভারতের সব রাজ্য দখল করে নেবে! বাংলাদেশের এই ভারত বিরোধিতায় ক্ষুব্ধ এপার বাংলার মানুষও।
এমনই এক প্রেক্ষাপটে অস্থায়ী দোকানের সাইন বোর্ডে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ছবি সাঁটিয়ে আমজনতার ক্ষোভের মুখে পড়লেন দুই শাড়ি বিক্রেতা।
তাঁদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, আদতে পূর্বস্থলীর বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও প্রথমে নিজেদের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বলে দাবি করেন তাঁরা! তাঁদের যুক্তি, নিজেদের বাংলাদেশি পরিচয় দিলে ক্রেতারা নাকি শাড়ির গুণমান নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারেন!
গত ৬ ডিসেম্বর পশ্চিম বর্ধমানে দুর্গাপুর উৎসবের সূচনা করা হয়। এই উৎসবে বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা নিজেদের পসার নিয়ে বসেন। এঁদের মধ্যেই ছিলেন পূর্বস্থলীর দুই ব্যবসায়ী - সামসুর রহমান ও নূর আলমিন শেখ।
তাঁরা বিক্রি করছিলেন বাংলাদেশ থেকে আনা জামদানি, তসর, মসলিন, টাঙ্গাইল-সহ নানা ধরনের শাড়ি। কিন্তু, হঠাৎই লোকজনের নজরে আসে, তাঁদের স্টলের সাইন বোর্ডে আঁকা রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। এতেই সকলে ক্ষেপে যান।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দুই ব্যবসায়ী জানান, তাঁরা সমস্ত আইন মেনে, রাজস্ব দিয়ে বাংলাদেশ থেকে শাড়ি এনে ব্যবসা করেন। ওপারের দোকানের সমস্ত তথ্য দিলে ক্রেতারা নিশ্চিন্ত হন যে তাঁরা আসল জিনিস পাচ্ছেন। সেই একই কারণেই তাঁরা দোকানের সাইন বোর্ডে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়েছিলেন। এতে যে হিতে বিপরীত হতে পারে, তা তাঁদের একবারও মনে হয়নি!
পরে তাঁরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ছবি-সহ সাইন বোর্ডটি খুলে দেন। কিন্তু, তাতেও মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। তাই, শেষমেশ উদ্যোক্তারা ওই স্টলটিই বন্ধ করে দেন।
অন্যদিকে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, ওই দুই ব্যবসায়ী বাংলাদেশি পরিচয়ে ভাঁড়িয়ে ব্যবসা করছিলেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই আসরে নামেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। সূত্রের দাবি, মূলত তিনিই ওই স্টলটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তোলেন। অশান্তি এড়াতে সেই দাবি মেনে নেন উদ্যোক্তারা।