আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। এই অভিযোগ বারবার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগ তুলে এখন ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প এনে গ্রামীণ মানুষের মাথার ছাদ গড়ে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ‘বাংলার বাড়ি’ নির্মাণ করতে প্রথম কিস্তির টাকা ৩১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে উপভোক্তা যাঁরা তাঁদের অ্যাকাউন্টে। এবার দেখা গেল, একই গ্রামের বিজেপির ২০টি পরিবার বাংলার বাড়ির টাকা পেল। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে তদ্বির করেছিলেন। আর তাতেই হল কাজ।
প্রধান বিরোধী দল বিজেপি করার পরও শাসকদলের পক্ষ থেকে সৌজন্য বজায় রাখা হল। অথচ আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ। বিজেপির এই ২০টি পরিবারের জন্য তদ্বির করেছিলেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের ধীমান রায়। ওই পরিবারগুলির জন্য বাংলার বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা চলেও গিয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ ব্লকের আলিগ্রামের বিজেপি কর্মীদের পরিবারগুলির হাতে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দেন আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায়। আলিগ্রামে আছে দুটি সংসদ। দুটি সংসদ মিলে আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকায় আছে ৫৪ জন উপভোক্তা। তার মধ্যে ২০টি পরিবার আছে যাঁরা সক্রিয়ভাবে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন: পান্ডার মাধ্যমে পুজো দিলে মিলবে হোটেল, তারাপীঠে নয়া ফতোয়ায় তুমুল আলোড়ন
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির অন্দরে ফিসফাস শুরু হয়েছে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প পাচ্ছেন সকলেই। এটা প্রমাণ হয়ে গেল। চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্য এবং জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। যে দলের সরকার বাংলাকে বঞ্চিত করেছে সেই দলের কর্মীদের মাথার ছাদ দিল রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে বিজেপি কর্মী আকাশ গণ বলেন, ‘আমরা সবাই সরকারি বাড়ি পাওয়ার যোগ্য। মাটির বাড়িতে বসবাস করি। আমরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি নিজে আমাদের বাড়ির পরিস্থিতি ঘুরে দেখে আমাদের দলের কর্মীদের পরিবারগুলির নাম তালিকায় দেন। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দু’দিন আগে চলেও এসেছে আমাদের অ্যাকাউন্টে।’
এই খবর এখন চাউর হয়ে গিয়েছে। বিজেপি কাছে যা অস্বস্তির। তবে এই বিষয়টি নিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতাদের কেউ মুখ খোলেননি। বরং তৃণমূল কংগ্রেস প্রচার করছে, তাঁরা বিরোধী দলকেও রাজ্য সরকারের প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করেছে। তবে বিজেপির সাংগঠনিক বর্ধমান (সদর) জেলা কমিটির সহ–সভাপতি মৃত্যুজয় চন্দ্রের বক্তব্য, ‘সরকারি অনুদানের ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থাকা কাম্য নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেটাই মেনে চলেন। আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে এই জন্য সাধুবাদ জানাই। আর রাজ্যের শাসকদলের জন্য নেতা–কর্মীদের আহবান জানাই তাঁরাও যেন এটা অনুসরণ করেন।’