‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাতে গরিব মানুষের মাথার উপর ছাদ হয়। নিজের একটা বাড়ি হয়। সেখানে ওই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের টাকা থেকে কাটমানি খেতে যান বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মী। এই কাজ করতে আগেই নিষেধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী কেউ এমন কিছু করলে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা যেন থানায় গিয়ে এফআইআর করেন এই নিদানও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও দেখা গেল, একশ্রেণির লোভী নেতা–কর্মী কাটমানি খেতে চেষ্টা করলেন। যার জন্য এফআইআরের সংখ্যা দাঁড়াল বিপুল।
এই কাটমানি খাওয়া ঠেকাতে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘কেউ যেন কাটমানি না খেতে পারে। জেলা প্রশাসনকে সেটা দেখতে হবে।’ এরপরও যা ঘটল তাতে জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। তা না হলে এত এফআইআর হল কেমন করে? উঠছে প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরও ‘বাংলার বাড়ির’ টাকা থেকে কাটমানি আদায়ের নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এই অভিযোগগুলি আসছে মূলত উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলা থেকে। যা প্রকাশ্যে আসতেই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে গ্যাংস্টার ছোটা রাজন, হঠাৎ কী এমন ঘটল?
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০টি এফআইআর দায়ের হয়েছে জেলার নানা থানায়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কর্তারা থাকা সত্ত্বেও এমন কাজ হয় কী করে? উঠেছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে এক জেলার পুলিশকর্তা বলেন, ‘সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। প্রত্যেকটি অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ব্যাপারে কাউকে রেয়াত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ আছে। সে যত বড়ই নেতা হোন না কেন।’ গত ৩১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে সকল উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে রেখেছে। এক টাকাও দেয়নি। সেখানে রাজ্য সরকার কষ্ট করে এই টাকা দিচ্ছে গরিব মানুষের মাথার ছাদের জন্য।
সেখান থেকে কাটমানি চাওয়া কতটা ঘৃণ্য তা এখন দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই। এমনটা ঘটতে পারে তা আগাম আঁচ করেই মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে সক্রিয় থাকতে বলে ছিলেন। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে অনিয়ম ঠেকাতে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর আগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বারবার পরীক্ষা হয়েছে। রাজ্যের ১২ লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পৌঁছে গিয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানায় কাটমানি নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যার ভিত্তিতে শাহানাজ আলম নামে দক্ষিণ মানকুন্ডার এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শাহনাজের আত্মীয় হলেন আজমিরা খাতুন মানকুন্ডা–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত সদস্যা।