এক বছরের অপেক্ষা শেষ। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা মেনে এবারও ‘শীতের অতিথি’ পরিযায়ী পাখিদের ভিড় জমতে শুরু করেছে বাঁকুড়া উন্নয়নী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জলাশয়েও। সুদূর সাইবেরিয়া, ইউরোপ, রাশিয়া, চিন এবং তিব্বতের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এখানে আপাতত অস্থায়ী আস্তানা গড়ে তুলেছে তারা। শীত কমতে শুরু করলে এই পাখিদের দল পুরনো পথ ধরে আবারও আপন নীড়ে পাড়ি দেবে নিজের দেশে। তাই এখন এই পরিযায়ী পাখিদের দেখতে মানুষজনও ভিড় করছেন।
প্রত্যেকবারের মতো এবারও পক্ষীপ্রেমী মানুষদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে শহর সংলগ্ন পুয়াবাগানের এই কলেজ প্রাঙ্গণে। তবে এই অতিথিদের স্বাভাবিক জীবনে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকেও কড়া নজর রেখেছেন বেসরকারি এই কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ কৃষ্ণেন্দু অধূর্য্য বলেন, ‘পরিযায়ী পাখিদের এবার আসতে কিছুটা দেরি হওয়ায় আমরা বেশ চিন্তিত ছিলাম। পাখিদের যাতে কেউ বিরক্ত করতে না পারে সেই বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। তার সঙ্গে পূরো এলাকাটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ তো আছেই।’
আরও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনায় ডেথ অডিট বাধ্যতামূলক করল স্বাস্থ্য ভবন, জারি হয়েছে নয়া বিজ্ঞপ্তি
তবে নিজেদের কলেজের জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিদের দেখা পেয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। তাঁরাও নিজেদের মতো করে এখন খেয়াল রাখছেন পাখিদের। এই কলেজেরই ছাত্রী বৃষ্টি দত্তের বক্তব্য, ‘পাখির ডাকই আমাদের মনে করিয়ে দেয় এই যান্ত্রিক দুনিয়ার বাইরেও একটা জগৎ আছে। আমরা যখন ক্লাস রুমে থাকি, ঠিক তখন এই পাখিদের কিচির মিচির আওয়াজই আমাদের আওয়াজের সঙ্গে মিশে যায়। এই কলতান পড়াশুনায় আরও বেশি মনোযোগী করে তোলে। তবে এই পাখিদের ফিরে যাওয়ার সময় হলে খানিকটা মন খারাপ হয়ে যায়।’
এই পরিযায়ী পাখিদের ছবিও তোলা হচ্ছে। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় জায়গা পাচ্ছে। পাখিদের আসা যাওয়া নিয়ে এখন কৌতূহলী মানুষের ভিড় বাড়ছে। একেবারে পিকনিক আমেজ তৈরি হয়েছে। পাখিদের কিচির–মিচির ডাক মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি তৈরি করে বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা। ওই কলেজের পড়ুয়া সায়ন মণ্ডল, বর্ণালী আদকরা পাখিদের যত্ন নিয়ে চলেছেন। শীতের এই দিনগুলিতে প্রত্যেকদিন পাখিদের দেখতে আসা এবং ছবি তোলা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।