আর্থিক প্রতারণার তদন্তে নেমে বড়সড় সাফল্য পেল বাঁকুড়া পুলিশ। ভুয়ো নথি জমা দিতে চালু করা প্রায় ৯ হাজার মোবাইলের সিম বাজেয়াপ্ত করল তারা। গ্রেফতার করা হয়েছে অ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রির চক্রের ৬ সদস্যকে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই সিম ব্যবহার করে তৈরি করা হতো ই-ওয়ালেট। সেই ই-ওয়ালেটে চালান করা হতো অনলাইন প্রতারণার টাকা।
সম্প্রতি বাঁকুড়া পুলিশ জানতে পারে জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম। তদন্তে নেমে কোতুলপুরের এক ব্যবসায়ীকে চিহ্নিত করে তারা। রামপ্রসাদ দিগর নামে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাজার হাজার প্রি-আক্টিভেটেড সিম কার্ড কিনত বাঁকুড়ার ধবগ্রামের বাসিন্দা অভিষেক মণ্ডল। তার পর ভুয়ো নথি ও ফেসবুক থেকে ডাউনলোড করা ব্যক্তিদের ছবি বসিয়ে অ্যাক্টিভেট করা হতো সিমকার্ডগুলি। সেগুলি দিয়ে চালু করা হতো ই-ওয়ালেট। তার পর চড়া দামে সাইবার প্রতারকদের সিমগুলি বিক্রি করত অভিযুক্ত অভিষেক।
গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ গোপন রাখতে টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করতো অভিষেক। লেনদেন হতো ক্রিপটোকারেন্সির মাধ্যমে।
এদিন তল্লাশি চালিয়ে অভিষেক মণ্ডল-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে বহু ভুয়ো নথি, ৮,২৮২টি প্রি-আক্টিভেটেড সিম, ৭টি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পাসবই, ২৩টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ, একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ১টি ক্যামেরা ও ১ লক্ষ ১৫ হাজার নগদ ও ১৫টি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করেছে। \
তদন্তে পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে সক্রিয় রয়েছে এই চক্রটি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই পদ্ধতিতে আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে এই চক্রটি। এই চক্রের সাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক বড় প্রতারক চক্রের যোগ রয়েছে বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।