মাওবাদী সমস্যার ধোঁয়া তুলে বেশ কয়েক বছর মিটার রিডিং হয়নি। বিলও আসেনি। তারপর মহামারির কবলে পড়ে আরও দু'বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এখন মাথায় হাত পড়েছে বাঁকুড়ার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। কারণ ,এই কয়েক বছরের লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া অর্থই শুধু নয় , তার সঙ্গে মোটা অঙ্কের সুদ চাপানো বিদ্যুতের বিল হাতে পেয়েছেন বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ব্লকের গড়গড়িয়া এলাকার বাসিন্দারা।
এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবাদে সারেঙ্গা ব্লক তৃণমূলের নেতৃত্বের সারেঙ্গা বিদ্যুৎ দফতরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন গড়গড়িয়ার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয় , বেশ কয়েক দফা দাবিতে স্টেশন ম্যানেজারের কাছে ডেপুটেশনও জমা দিলেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ , ২০০৯ সাল থেকে বেশ কয়েক বছর মাওবাদী হামলার ধোঁয়া তুলে মিটার রিডিং করা হয়নি। আবার গত দু'বছর ধরে করোনা মহামারির অজুহাতে না মিটার রিডিং হয়েছে, না বিল পাঠানো হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ দফতরের তরফে এক একজনকে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে বিল ধরানো হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। আবার অনেকের অভিযোগ, তাঁদের মৃত বাবার নামে লক্ষাধিক টাকার বিল এসেছে। যা মৃতদের ছেলেরা বহন করতে অক্ষম। সে কারণে তাঁরা নতুন কানেকশন পাচ্ছেন না।
তাঁদের অভিযোগ, কোনওরকমে দিন গুজরান করা হতদরিদ্র পরিবারগুলোর পক্ষে এত বিপুল অঙ্কের টাকা পরিশোধ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।
ডেপুটেশনে তাঁরা একাধিক বিষয়ে দাবি জানিয়েছেন, তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল, নিয়মিত মিটার রিডিং করে বিল জমা নিতে হবে। দীর্ঘ কয়েক বছরের যে বকেয়া বিল রয়েছে, তার মধ্যে থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সুদ বাদ দিতে হবে। সুদ বাদে আসল টাকা ৬ কিস্তিতে নিতে হবে। অতিরিক্ত টাকা দেওয়া কারো পক্ষেই সম্ভব নয়, তাই যে যেমন পারবেন টাকা শোধ করবেন। চাপ দিলে চলবে না ,তেমন ভাবেই নিতে হবে বিদ্যুৎ দফতরকে। এছাড়াও যাদের মৃত বাবার নামে বকেয়া বিল এসেছে , সেটা তাদের সন্তানদের উপর চাপানো চলবে না। সেই বিল মকুব করার পাশাপাশি নতুন সংযোগ দিতে গ্রাহকদের হয়রানি করা যাবে না।
এদিন অবশ্য স্টেশন মাস্টার বিক্ষোভকারীদের অভাব-অভিযোগ মনোযোগ সহকারে শোনেন। তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। তারপরেই এই দাবিগুলো মানা হবে কি না, তা নিয়ে জানাবেন তিনি। গ্রাহকদের দাবি দাওয়া পূরণ না হলে, আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সারেঙ্গা ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস।