এবার লোকসভা নির্বাচনে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এমন লোকসভা কেন্দ্রে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের স্নায়ুর চাপ বেড়ে গেল। এই বাঁশবেড়িয়া পুরসভা এলাকায় প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ভোটে বিজেপি পরাজিত করেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। সেটার রেশ এখনও কাটেনি। এরপরও তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের কোনও বৈঠকেই ডাকেন না বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলে অভিযোগ। এবার তার মধ্যেই বাঁশবেড়িয়া পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন মোট ১২ জন তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর।
সরাসরি বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলররা পদত্যাগ করলেন। যা প্রবল অস্বস্তি তৈরি করেছে হুগলি জেলায়। এই খবর রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখন বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছেন বলে সূত্রের খবর। গতকাল শুক্রবার বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তাতে স্নায়ুর চাপ বাড়ছে আদিত্য নিয়োগীর। তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান তাঁদের কথা শোনেন না। নিজের কিছু পেটোয়া লোকজনকে দিয়ে কাজ করিয়ে থাকেন। কাউন্সিলরদের কোনও গুরুত্ব দেন না। চেয়ারম্যানের অসহযোগিতায় পুর পরিষেবা নিজেদের ওয়ার্ডে দিতে পারছি না। তাইই লোকসভা নির্বাচনে পরাজয় হয়েছে।’
আরও পড়ুন: হুগলি গ্রামীণ পুলিশের নয়া উদ্যোগ, বাড়িতে বসেই বাসিন্দারা অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন
এই আবহে গত ২২ জুন তারিখে চেয়ারম্যান বদলের দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। তারপর গতকাল শুক্রবার বাঁশবেড়িয়া পুরসভার একাধিক স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন ১২ জন কাউন্সিলর। তাতেই চাপ বেড়েছে চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগীর। তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দাস–প্রিয়াঙ্কা দাস–সহ কয়েকজন বলেন, ‘আমরা কাউন্সিলর হয়েও এলাকার কাজ করতে পারছি না। স্ট্যান্ডিং কমিটি আমাদের কাছে কাঠের পুতুল ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ স্ট্যান্ডিং কমিটির কোনও বৈঠক হয় না। সব সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যান নিজেই নেন। তিনটি স্ট্যান্ডিং কমিটির মাথায় আছেন চেয়ারম্যান। এটা আমরা দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তাঁরা নিশ্চয়ই কোনও পদক্ষেপ করবেন।’
কিন্তু এই ঘটনার আগে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ধরনায় বসেছিলেন কাউন্সিলররা। যদিও এই বিষয়ে চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। বাঁশবেড়িয়া পুরসভা সূত্রে খবর, প্রথম বোর্ড মিটিংয়ে একাধিক দফতরের ছ’টি স্ট্যান্ডিং কমিটি তৈরি হলেও সেগুলি কোনও কাজ করে না। আবার বাঁশবেড়িয়া পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলররা চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগীর বিরুদ্ধে বারবার বিদ্রোহ ঘোষণা করার ফলে অস্বস্তিতে পড়েছেন নেতৃত্ব। এই জেলায় তিনজন বিধায়ক আছে তৃণমূল কংগ্রেসের। লোকসভা কেন্দ্র জিতে সাংসদ হন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর এমন ঘটনা বেমানান।