জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট করানোর ঘটনা ঘিরে বিগত দিনে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় বিরোধীরা আঙুল তুলেছিল শাসকদল তৃণমূল এবং প্রশাসনের দিকে। তবে এবার জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন এক বিজেপি নেতা। রিপোর্ট অনুযায়ী, ধৃতের নাম ইন্দ্রজিৎ দে। তিনি বারাসতের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বারাসতের নবপল্লি এলাকা থেকে জ্যোতির্ময় দে নামে এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকে জেরা করেই নাকি ইন্দ্রজিৎ দে-র নাম সামনে আসে। (আরও পড়ুন: রেলের কাজে বাধা, সাহায্য চেয়ে মমতাকে চিঠি, মন্ত্রী বললেন - এ সব ফালতু কথা)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মেডিক্যাল প্রবেশিকায় প্রথম সুশোভন, ফল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ঢাকায়
জেরায় নাকি জ্যোতির্ময় পুলিশকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে সে ভারতে আসার পরে ইন্দ্রজিৎ দে তাঁর পরিচয়পত্র থেকে পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর সেই বয়ানের ভিত্তিতে বারাসত পুলিশ গ্রেফতার করে ইন্দ্রজিৎকে। তাঁকে আদালতে পেশ করা হয় রবিবার। ইন্দ্রজিৎ দের ৩ দিনের পুলিশে হেফাজতের নির্দেশ দেন বারাসত আদালতের বিচারক। এই ইন্দ্রজিৎ দে গত পুরভোটে বারাসত পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন। (আরও পড়ুন: মারা গেলেন কাজী নজরুল ইসলামের নাতি, বিস্ফোরণে শ্বাসনালী সহ পুড়েছিল দেহের ৭৪%)
আরও পড়ুন: 'ওর নামে মেয়ে ঘটিত অভিযোগ শুনিনি… আরজি করে অন্য কেউ…', মুখ খুললেন সঞ্জয়ের বোন
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক আবদুল হাই গ্রেফতার হয়েছিলেন পাসপোর্ট জালিয়াতিতে। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে ধরা হয়েছিল তাঁকে। ধৃত ২০২৪ সালেই কলকাতা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তার আগে কলকাতা পুলিশের সিকিওরিটি কন্ট্রোল বিভাগে কর্মরত ছিলেন তিনি। আড়াই বছর কাজ করেছেন পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন অফিসার হিসাবে। জানা গিয়েছে, পাসপোর্ট কাণ্ডের অন্যতম চক্রী সমরেশ বিশ্বাসের অ্যাকাউন্ট থেকে আবদুল হাইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গত কয়েক বছরে গিয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। পাসপোর্ট পিছু ২৫ হাজার টাকা করে নিতেন এই আবদুল হাই। এই আবহে ধৃতকে জেরা করে আর কোন কোন আধিকারিক এই দুর্নীতিতে যুক্ত তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। (আরও পড়ুন: 'ছেলের ফাঁসি হোক…একা কাঁদব', আরজি করের নির্যাতিতাকে 'মেয়ের মতো' বললেন সঞ্জয়ের মা)
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছরে ১৫০ জনেরও বেশি অনুপ্রবেশকারীকে ভারতীয় পাসপোর্ট করিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছে সমরেশ। তার মধ্যে ৫০টির বেশি পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে আবদুল হাইয়ের হাত ধরে। পাসপোর্টের কারবারের সূত্রেই সমরেশের সঙ্গে পরিচয় হয় আবদুলের। কিছুদিন পর আবদুলকে টাকার টোপ দেন সমরেশ। সেই টোপ গিলেও নেন আবদুল হাই। তার পরই শুরু হয় জালিয়াতির কারবার। আবদুল ছাড়াও এখনও পর্যন্ত বহু ব্যক্তিকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই চক্রের জাল আরও দূর পর্যন্ত ছড়ানো বলে মনে করা হচ্ছে।