সম্প্রতি উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসাবে দাবি করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা। জন বারলার এই মন্তব্যকে অবশ্য ভালোভাবে নেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি বিজেপির রাজ্য সভাপতি আলিপুরদুয়ারে সাংগঠনিক বৈঠক করতে আসেন। কিন্তু দিলীপের এই বৈঠকে হাজির ছিলেন না আলিপুরদুয়ারেরই সাংসদ। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে।
গত বিধানসভা ভোটে আলিপুরদুয়ারে বিজেপি ভালো ফল করলেও সাংগঠনিকভাবে সেখানেই বড় ভাঙন ধরে। খোদ জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা সহ বেশ কয়েকজন তাঁর অনুগামীরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এই ঘটনার পর গত রবিবার সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে আলিপুরদুয়ারে আসেন দিলীপ। কিন্তু দিলীপের এই বৈঠকে হাজির ছিলেন না আলিপুরদুয়ারের সাংসদ। দলীয় সূত্রে খবর, ডুয়ার্সে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ বাগ্রাকোটের চা বাগানের অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম দফতরের একটি জরুরি বৈঠকে হাজির ছিলেন তিনি। দলের জরুরি সাংগঠনিক বৈঠক ছেড়ে ডুয়ার্সের চা বাগানের বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এই প্রসঙ্গে আলাপুরদুয়ারের সাংসদ স্পষ্ট জানিয়েছেন, জেলা সংগঠনের বৈঠকে হাজির না থেকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ চা বাগানের সমস্যার সমাধান করা তাঁর কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ডানকান পরিত্যক্ত বাগ্রাকোট চা বাগান ১ জুলাই থেকে খুলে যাবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, দলের রাজ্য সভাপতিকে তিনি এড়িয়ে যাবেন কেন। তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন কথা হয়। বারলার অনুপস্থিতিকে বড় করে দেখতে নারাজ দিলীপও। তাঁর মতে, একজন সাংসদ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকতেই পারেন। তাঁকে যে উপস্থিত থাকতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
যদিও এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল নেতা তাপস রায় জানান, আসলে বাংলায় বিজেপির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। দলে শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। সবাই সবার মতো চলছে। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে শুধু জন বারলাই নন, আরও অনেক বিজেপি বিধায়কই সুরে সুর মিলিয়েছেন। এতে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে রাজ্য বিজেপিকে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ যে বিষয়টিকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না সেকথা জানিয়েও দিয়েছেন। তবু বিতর্ক এখনও কাটেনি।