আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিরোধীদের থেকে শুরু করে জুনিয়র ডাক্তাররা সকলেই কলকাতা পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এমনকী কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ চেয়ে লালবাজার অভিযান পর্যন্ত করা হয়েছিল। সেখানে আজ শনিবার লালবাজারের তৎপরতায় প্রাণ বেঁচে গেল এক মহিলার। তাও এই শহরের ঘটনা নয়। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন ওই মহিলা ব্যারাকপুরে নিজের বাড়িতে।
আর এই আত্মহত্যা করার আগে শুধু একটা ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন ওই মহিলা। দুই অক্ষরের একটি শব্দ অনেকেরই নজরে আসার কথা নয়। তবে পুলিশের সন্দেহ হয়েছিল। গোটা স্ক্রিন জুড়ে সেই শব্দটি দেখে সন্দেহ হয়। ভয়ংকর সেই শব্দটি নাড়িয়ে দেয় লালবাজারের দুঁদে অফিসারদের। কারণ ফেসবুক পোস্টে শুধু লেখা ছিল ‘আসি’। তারপর শুধুই তিনটি বিন্দু বা ডট। এটাকে অনেকে সামান্য মনে করতেই পারেন। কিন্তু আদতে সেটা সামান্য ছিল না। সবাইকে ছেড়ে চলে যাওয়ার বার্তা ছিল ‘আসি’ শব্দের মধ্যে। ফেসবুকের স্ক্রিনে ভেসে ওঠা এই শব্দটি দেখে কলকাতা পুলিশের এটাই মনে হয়েছিল। তাই তৎপরতা শুরু করে দেয় লালবাজার। ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে পুলিশ পৌঁছে যায় মহিলার বাড়িতে।
আর মহিলার বাড়ি ব্যারাকপুরে পৌঁছে পুলিশকর্মীরা দেখেন, তাঁদের আশঙ্কাই সত্য ছিল। ওই মহিলা নিজের গলায় ঢেলে দিয়েছেন বিষ! তবে সেই বিষ তখনও তাঁর শরীরে সেভাবে মিশতে পারেনি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝেই দ্রুত ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পুলিশের তৎপরতায় ওই মহিলা প্রাণরক্ষা হল। এই ঘটনার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি পোস্ট করে ওই মহিলার দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। তখনই এই ঘটনা সকলে জানতে পারেন। পুলিশের এই মানবিক কাজের প্রশংসা করেন বহু মানুষ।
আরও পড়ুন: গ্রামবাংলার মানুষের এবার আবাসের টাকা মিলতে চলেছে, নির্ভুল তালিকা প্রস্তুতির নির্দেশ
এই ঘটনাটি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার। কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখা একটাই শব্দ—‘আসি’। যা নজরে পড়তেই লালবাজারকে জানানো হয়। তখন খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, পোস্টটি ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বাসিন্দার। বিপদের আভাস পেয়ে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের সঙ্গে যোগাযোগ করি আমরা। আর সংশ্লিষ্ট থানা থেকে আমাদের সহকর্মীরা ছুটে যান তাঁর বাড়িতে। সেখানে পৌঁছে দেখা যায়, ততক্ষণে নিজের প্রাণ নেওয়ার উদ্দেশে বিষ সেবন করেছেন ভদ্রমহিলা। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ফলে তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁর আরোগ্য কামনা করে রইল শুভেচ্ছা।’