ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি এবং ব্যবসায়ীর ছেলেকে গুলি করে ‘খুনে’র ঘটনায় পুলিশ দু’জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। শুক্রবার তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এই খুনের ঘটনার তদন্তভার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। জেরা–পর্ব শেষ হওয়ার পর কেউ গ্রেফতার হতে পারেন। বুধবার ভরসন্ধ্যায় ব্যারাকপুরের একটি সোনার দোকানে ডাকাতরা হামলা করে। ডাকাতি করতে এসে বাধা পেলে গুলি চালায়। আর সেই গুলি লেগে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন মালিকের ছেলে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। তারপরই দু’জন আটক।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? ব্যারাকপুরের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, ভরসন্ধ্যায় অস্ত্র হাতে দোকানের ভিতর ঢুকে পড়ে কয়েকজন ডাকাত। তাদের লুটপাটে বাধা দিতে গিয়ে খুন হন দোকান মালিকের ছেলে নীলাদ্রি। কিন্তু তদন্ত যত এগোচ্ছে তত নতুন তত্ত্ব উঠে আসছে। এই আবহে সাংসদ অর্জন সিং নিশানা করেছেন পুলিশকে। এই ঘটনা শুধুই ডাকাতিতে বাধা পেয়ে খুন নাকি পুরনো কোনও শত্রুতার জের সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঠিক কী ঘটেছিল ব্যারাকপুরে? ভরসন্ধ্যায় জনবহুল ব্যারাকপুরে ডাকাতিতে বাধা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয় সোনার দোকান মালিকের পুত্রের। ডাকাতদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি হন দোকান মালিক নীলরতন সিং এবং দোকানের নিরাপত্তা কর্মী শঙ্কর। সোনার দোকানে ডাকাতদের হানা এবং গুলিতে মৃত এবং আহত হওয়ার এই ঘটনায় তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে যান ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলক রাজোরিয়া–সহ পদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থল ও এলাকার সিসিটিভি খতিয়ে দেখে ডাকাতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ডাকাতদের গুলিতে মৃত দোকান মালিকের পুত্রের নাম নীলাদ্রি সিং (২৬)। মাত্র ছয় মাস আগে বিয়ে হয়েছিল নীলাদ্রির। জামাইষষ্ঠীর আগেই সব শেষ।
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০০১ সালে এলাকার বাসিন্দার থেকে ৩০০ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে দোকান–ঘরটি নিয়েছিলেন নিহত যুবক নীলাদ্রির বাবা। সেখানে সিং জুলেয়ারি হাউজ নামে সোনার দোকান খোলেন। সেই ভাড়া পরে বেড়ে হয় ৫০০ টাকা। সম্প্রতি বাড়ির মালিক দোকান ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে রাজি হননি নীলাদ্রির বাবা। এই নিয়ে একটা বিবাদ চলছিল। তার জেরে আদালতে মামলাও চলছে বলে সূত্রের খবর। তার মধ্যেই এমন ঘটনা পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে। অর্থাৎ দুটি ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।