মোবাইলে একটা মিসড কল আসে। তারপর সেখানে ঘুরিয়ে ফোন করেন এক গৃহবধূ। উলটো দিকে তখন যুবকের রাশভারী কণ্ঠস্বর শুনে বধূর বুকে উথাল–পাতাল ঢেউ শুরু হয়ে যায়। যুবকও সুমধুর কণ্ঠস্বর শুনে বিগলিত। এইভাবেই শুরু হয় প্রথম কথোপকথন এবং আলাপ। সেই পরিচয় থেকে হল দু’জনের দেখা। তারপর তীব্র গতিতে বেড়ে গেল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সেখান থেকে এল বিয়ের প্রতিশ্রুতি। আর তা পেয়ে প্রেমিকের হাত ধরে আগের সংসার ভেঙে ছিলেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু সেই সংসারও দীর্ঘস্থায়ী হল না। মাত্র ৮ মাসের মাথায় ভেঙে গেল সংসার।
তবে সেই ভাঙন সাধারণ ছিল না। অভিযোগ, ওই বধূ প্রেমিকাকে বেধড়ক মারধর করে এবং কামড় দিয়ে চম্পট দিল প্রেমিক স্বামী। এই ঘটনা ঘটেছে ক্যানিংয়ের তালদি এলাকায়। এখন পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছেন ইসমা খাতুন নামে ওই গৃহবধূ। পুলিশ সূত্রে খবর, জীবনতলা থানার অন্তর্গত দেউলি–২ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ইসমা খাতুন। চার বছর আগে এই এলাকার রিয়াজুল মোল্লার সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁর তিন বছর বয়সের কন্যাও রয়েছে। কিন্তু গত প্রায় আট মাস আগে জামালউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে মোবাইলের সূত্রে শুরু হয় প্রেমপর্ব। আর তা থেকেই যুবক জামালের সঙ্গে বিয়ে। জামালের আগের পক্ষের কন্যাকে মেনেও নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ৫০টি এফআইআর দায়ের, কাটমানি নেওয়ার জের
কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশি দূর এগোলো না। যার জন্যই আজ দিশেহারা বধূ ইসমা খাতুন। প্রায় আট মাস ধরে জামালের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকলেও দু’জনের বিয়ে হয়নি। ক্যানিংয়ের তালদি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করা চলছিল। একসপ্তাহ আগে ইসমা খাতুন জামালকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। আর তখন জামাল বিয়ে করতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ। এখান থেকেই সম্পর্কের অবনতি হয়। আর ইসমা খাতুনকে বেধড়ক মারধর করে এবং তাঁর শরীরের নানা জায়গায় কামড় দিয়ে ভাড়া বাড়ি ছেড়ে চম্পট দেয় জামাল বলে অভিযোগ।
এখানেই শেষ নয়, ইসমা খাতুনের কাছ থেকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে চলে গিয়েছে জামাল বলে পুলিশে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। এই ঘটনার পর গুরুতর জখম অবস্থায় ইসমা খাতুন চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। জখম ইসমা খাতুনের অভিযোগ, ‘জামালউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে ফোনে আলাপ হয়। তারপর প্রেম এবং আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। আট মাস ভাড়া ঘরে নিয়ে গিয়ে রেখেছিল। বিয়ের জন্য বললে আমাকে মারধর করে ও দেহের নানা অংশে কামড় দেয়। পঞ্চাশ হাজার টাকা ও কিছু গয়না নিয়ে পালিয়ে যায়। তাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি।’