দিল্লির শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ছায়া বারুইপুরে। পুলিশের দাবি, বারুইপুরের প্রাক্তন নৌসেনাকর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে খুন করেছেন তাঁর ছেলে ও স্ত্রী। এর পর দেহ ৫ টুকরো করে প্রতি রাতে সাইকেলে করে সেই দেহাংশ ফেলে এসেছে পুকুরে ও জঙ্গলে। উজ্জ্বলবাবুর বাকি দেহাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন মা ও ছেলে।
গত ১৭ নভেম্বর বারুইপুর – মল্লিকপুর সড়কের পাশে মদনমাল্য গ্রামের পুকুর থেকে উদ্ধার হয় উজ্জ্বলবাবুর দেহ। দেহের হাত পা ছিল কাটা। তদন্তে নেমে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় আসে উজ্জ্বলবাবুর স্ত্রী ও ছেলে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নৌসেনা থেকে অবসরের সমস্ত সর্বক্ষণ মত্ত অবস্থায় থাকতেন উজ্জ্বলবাবু। তাঁর ছেলে জয় চক্রবর্তী পলিটেকনিক পাঠরত। ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কোর্স ফি দেওয়া নিয়ে বাবার সঙ্গে বিবাদ বাধে ছেলের। এর জেরে বাবাকে ধাক্কা দেন জয়। মাটিতে পড়ে যান উজ্জ্বলবাবু। তখন তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ছেলে জয়। ঘটনার সময় সামনেই ছিলেন উজ্জ্বলবাবুর স্ত্রী শ্যামলীদেবী। এর পর ২ জনে মিলে দেহ নিয়ে যান শৌচাগারে। সেখানে বাড়িতে থাকা কাটার দিয়ে দেহ থেকে ২টি হাত ও ২টি পা কাটেন।
কাকভোরে মা ও ছেলে চলে যান বারুইপুর থানায়। সেখানে গিয়ে পুলিশে উজ্জ্বলবাবুর নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। যদিও তার পর ২ রাত ওই দেহাংশ সাইকেলে করে নিয়ে বাড়ির আসেপাশে পুকুরে ও জঙ্গলে ফেলে আসেন জয়।
গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় উজ্জ্বলবাবুর দেহ উদ্ধার বয় রাস্তার পাশের পুকুর থেকে। দেহটি গোসাপ খাচ্ছিল। তাই দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। শ্যামলীদেবী দেহ সনাক্ত করেন। তিনি জানান ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় নেশা করতে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। কিন্তু গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে সময়ের কথা শ্যামলীদেবী বলছেন, তখন বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যায়নি উজ্জ্বলবাবুকে। এর পরই মা ও ছেলেকে লাগাতার জেরা শুরু করেন গোয়েন্দারা।
জেরায় ২ জন স্বীকার করেন, কোর্স ফির টাকা নিয়ে বাবা - ছেলের বিবাদের জেরে খুন হয়েছেন উজ্জ্বলবাবু। এর পর জয়ের দেখানো জায়গা থেকে উজ্জ্বলবাবুর কাটা পা উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় শ্যামলী চক্রবর্তী ও জয় চক্রবর্তীকে।