ঠিক ন'দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে শুনিয়েছিলেন - ‘হৃদমাঝারে রাখব’। এবার মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই একই গান শোনালেন বাউল বাসুদেব দাস। শেষবেলায় যোগ করলেন, ‘দিদিকে আমরা সবাই মুখ্যমন্ত্রী রাখব, ছেড়ে দেব না।’
বাউল শিল্পী আগেও নামডাক ছিল। কিন্তু ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে সেই ছবিটা একেবারে পালটে গিয়েছিল বাসুদেব বাউলের। কয়েকটা দিন তাঁর দিকেই তাক হয়ে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশের ক্যামেরা। শাহকে কী খাওয়াবেন, কী গান শোনাবেন, তা নিয়ে চর্চা চলছিল।
যদিও প্রথম থেকেই শাহের সেই ‘মধ্যাহ্নভোজনের রাজনীতি’-কে কটাক্ষ করে আসছিল তৃণমূল। শাহের ভোজনের পরই আসরে নামেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বাউলশিল্পীর মেয়ের উচ্চশিক্ষার আশ্বাস দেন। বাউলশিল্পীও জানান, শাহকে অনেক কথা বলবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু কোনও সুযোগ মেলেনি। শাহি-ভোজনের পর বিজেপিরও কারও সেই তল্লাটে হদিশ পাওয়া যায়নি। তার জেরে ‘হৃদমাঝারে রাখব’ বলেও হৃদয়ের মাঝে স্থান দিতে পারেননি। তখনই জানানো হয়েছিল, বোলপুরে মমতার পদযাত্রায় থাকবেন বাউলশিল্পী।
সেইমতো মঙ্গলবার বোলপুরে পদযাত্রায় মমতার কাছাকাছি ছিলেন বাসুদেব। একাধিকবার কথাও বলতে দেখা যায় মমতার সঙ্গে। সেই চার কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষে ভাষণ দেন। ভাষণের শেষে মমতা বলেন, 'আমি বাসুদেববাবুকে শেষ পর্বে দু'লাইন একটু আমাদের আশীর্বাদ দিতে বলব (পড়ুন গান গাইতে বলব)? বোলপুরের মাটি বাউলের মাটি, সারা বাংলা আছে, তবুও তার মধ্যে একজন কৃতী মানুষ।'
তারপরই গান ধরেন বাউলশিল্পী - ‘হৃদ মাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না।’ তার আগে বলেন, ‘দিদির জন্য আমি গানটা গাইছি।’ সেই গানে হাততালি দেখা যায় মমতাকে। শেষে অবশ্য কিছুটা চমক দেন বাউলশিল্পী। গেয়ে ওঠেন - ‘দিদিকে আমরা সবাই মুখ্যমন্ত্রী রাখব, ছেড়ে দেব না।’ তাতে মুগ্ধ হয়ে নিজের গলার উত্তরীয় খুলে বাউলশিল্পীকে পরিয়ে দেন মমতা।
তবে শাহ এবং মমতাকে একইভাবে গান শোনানোর কারণও জানান বাসুদেব বাউল। মিছিল শুরুর আগে বলেন, ‘আমরা তো বাউল। আমরা সবাইকে হৃদমাঝারে রাখি। কোনও দল দেখে নয়।’